ঘটনাস্থলে উপস্থিত চারজন কৃষক প্রথম আলোকে বলেন, আজ তাঁদের অনেক বড় খুশির দিন। কেননা এই বাঁধের কারণে তাঁদের কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে। পানি না থাকায় চাষাবাদ করতে পারেননি। বনে অবৈধভাবে বাঁধ দেওয়ায় তাঁরা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন বাঁধ কেটে দেওয়া হচ্ছে। আগের মতো পানি পাওয়া যাবে। তাতে চাষাবাদ করতে পারবেন।
বন বিভাগ বলছে, হ্রদ তৈরির কারণে গামারি, সেগুন, চিকরাশি, অর্জুনসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় প্রায় পাঁচ লাখ গাছ মারা গেছে। ডুবে যাওয়া জায়গার মধ্যে বন্য হাতির চলাচলের পথ ছিল। খ্যাঁকশিয়াল, শজারু, বন্য শূকর, বনমোরগ, ময়ূর, গুইসাপ, অজগরসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী এবং নানা প্রজাতির প্রাণী বাস করত সেখানে।
কৃষকেরা বলছেন, বাঁধ দেওয়ার ফলে ছড়া বন্ধ হয়ে গেছে। এতে লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার ৪ হাজার ২৫৫ একর জমির চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কৃষকেরা শুরু থেকেই সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলেও প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি।
বনের আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা বলেন, হ্রদটিতে শুষ্ক মৌসুমে পানির গভীরতা থাকে ৪৫ ফুটের মতো। তবে বর্ষায় গভীরতা বেড়ে প্রায় ৬০ ফুট পর্যন্ত দাঁড়ায়। সেখানে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করা হয়। হ্রদে নিয়মিত টিকিট কেনার বিনিময়ে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সুযোগ দেওয়া হয়। একেকজনের কাছ থেকে নেওয়া হয় তিন থেকে চার হাজার টাকা। পর্যটকদের কাছে ভাড়া দেওয়ার জন্য দুটি নৌকা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র বলছে, হ্রদ তৈরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা মূলত সেখানে একটি বড় পর্যটনকেন্দ্র করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলেন।