পোশাক সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

পোশাক সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

কর্মক্ষেত্রে পোশাক পরিধান নিয়ে আলোচনা হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং কোনও সার্কুলারও জারি করেনি বলে জানিয়েছে ব্যাংক কতৃপক্ষ। পাশাপাশি একটি অভ্যন্তরীণ আলোচনার ভিত্তিতে তৈরি খসড়া নির্দেশনাকে ‘পরামর্শমূলক’ হিসেবে উল্লেখ করে তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিবৃতিতে জানায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বয়সের তারতম্যের কারণে পোশাকের রুচি ও বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হয়, যা নারী-নারী ও পুরুষ-পুরুষ সহকর্মীদের মাঝে মানসিক দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে। সেই প্রেক্ষাপটে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও পেশাদার পরিবেশ গড়ে তুলতেই একটি পরামর্শমূলক সার্কুলার খসড়া আকারে তৈরি হয়েছিল, যাতে কারুকার্যপূর্ণ পোশাক নিরুৎসাহিত করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নারী সহকর্মীদের বোরকা বা হিজাব পরিধানে কোনও বাধ্যবাধকতা বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। সার্কুলারটি এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছিল যাতে কারও পোশাক পরিধানের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন না হয়।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে, বিষয়টি এখনও নীতিগতভাবে অনুমোদিত নয় এবং এই সংক্রান্ত কোনও চূড়ান্ত সার্কুলার জারি হয়নি। শুধুমাত্র বিভাগীয় পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে এবং তা থেকে সাময়িকভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং নির্দেশ দেন বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করতে। তার নির্দেশনা অনুযায়ী এই পোশাকবিধি সংক্রান্ত পদক্ষেপ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এদিকে জানা গেছে, গত ২১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ-২ (বেনিফিটস অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন উইং) থেকে অনুষ্ঠিত একটি মাসিক বিভাগীয় সভার কার্যবিবরণীতে পোশাকসহ আচরণ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার এবং দাফতরিক শিষ্টাচার বিষয়ে বেশ কিছু পরামর্শমূলক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় নারী কর্মীদের জন্য শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ ও ওড়না এবং পুরুষদের জন্য ফরমাল শার্ট-প্যান্ট নির্ধারণ, লেগিংস, শর্ট স্লিভ ড্রেস, জিনস ও গ্যাবার্ডিন পরিহার সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি দাফতরিক শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি অনুসরণ, সময়ানুবর্তিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চিত করেছে যে, সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে পেশাদার ও মার্জিত পোশাক পরার বিষয়ে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই এবং সম্মানজনক কর্মপরিবেশ বজায় রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য।

Scroll to Top