ওয়াশিংটন, ০৯ জুলাই – ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কারণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, পুতিন অনেক মানুষ হত্যা করছেন।
সেইসঙ্গে মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বিবেচনা করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বুধবার (৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, “পুতিন আমাদের দিকে অনেক বাজে কথা ছুড়ে দেন। সবসময়ই খুব ভদ্রভাবে কথা বলেন, কিন্তু পরে দেখা যায় এসবের কোনও মানে নেই।”
তিনি আরও বলেন, “পুতিন অনেক মানুষ হত্যা করছেন— তার নিজের সৈন্যরাও মরছে, ইউক্রেনের লোকজনও মরছে।”
সিনেটের পক্ষ থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দেওয়া একটি বিল সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, “আমি বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছি”। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেননি আদৌ তিনি এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করবেন কিনা।
ট্রাম্প বলেন, “আমি আপনাদের এখনই বলে দিতে পারি না। একটু চমক থাক না?” এরপর তিনি গত মাসে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পরিকল্পনার কথায় চলে যান।
এদিকে একইদিনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে বলেন, ইউরোপ কখনও ইউক্রেনকে ছেড়ে দেবে না। তিনি জানান, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স একটি “জোট” গড়ে ইউক্রেনের পাশে থাকবে।
ম্যাক্রোঁ বলেন, “যুদ্ধবিরতি আনতে এবং আলোচনার মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল ও টেকসই শান্তির পথ তৈরিতে আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করব, কারণ ইউক্রেনে যা ঘটছে তা আমাদের নিরাপত্তা ও মূল্যবোধের ওপর সরাসরি আঘাত।”
ট্রাম্প একইদিনে জানান, ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র, যার বেশিরভাগই হবে “প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র”। তবে মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র মজুদ কমে যাওয়ায় কিছু অস্ত্র সরবরাহ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছিল। পেন্টাগন জানিয়েছে, তারা একটি “সক্ষমতা পর্যালোচনা” চালাচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ করবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুতিনের সঙ্গে একাধিক ফোনালাপ করেও তিনি যুদ্ধ থামাতে পারেননি। গত মে মাসে তুরস্কে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি আলোচনা হয় এবং সেখানে একটি বন্দি বিনিময় চুক্তিও হয়। কিন্তু অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে তারা এখনও একমত হতে পারেনি।
এছাড়া মঙ্গলবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে পরবর্তী আলোচনার সম্ভাব্য তারিখের প্রস্তাবের অপেক্ষায় আছে। তার ভাষায়, “তারিখ ঠিক হলে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেব।”
এদিকে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনের শহরগুলোতে দূরপাল্লার হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া। একইসঙ্গে দেশটি যুদ্ধক্ষেত্রে একাধিক ফ্রন্টে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। গত সোমবার রাশিয়া দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনের দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের দাচনে গ্রামটি দখলে নিয়েছে।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ০৯ জুলাই ২০২৫