পুকুরে নেমেছিল বউমা, তাঁকে বাঁচাতে ঝাঁপ দিলেন শাশুড়ি! হিঙ্গলগঞ্জে শাশুড়ি-বৌমার মর্মান্তিক মৃত্যু

পুকুরে নেমেছিল বউমা, তাঁকে বাঁচাতে ঝাঁপ দিলেন শাশুড়ি! হিঙ্গলগঞ্জে শাশুড়ি-বৌমার মর্মান্তিক মৃত্যু

Last Updated:

অনেক খোঁজাখুঁজির পর যখন কোথাও সন্ধান মেলেনি, তখন গ্রামবাসীরা পুকুরে জাল ফেলেন। জালেই জড়িয়ে উঠে আসে শাশুড়ি-বৌমার নিথর দেহ। এমন মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন গোটা এলাকা।

জলে টইটুম্বুর পুকুরে মৃত্যু হল বউ-শাশুড়ির পুকুরে নেমেছিল বউমা, তাঁকে বাঁচাতে ঝাঁপ দিলেন শাশুড়ি! হিঙ্গলগঞ্জে শাশুড়ি-বৌমার মর্মান্তিক মৃত্যু
জলে টইটুম্বুর পুকুরে মৃত্যু হল বউ-শাশুড়ির 

জুলফিকার মোল্যা, উত্তর ২৪ পরগনা: বর্ষা বাড়তেই বাড়ছে জলে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা, হিঙ্গলগঞ্জে শাশুড়ি-বৌমার মর্মান্তিক মৃত্যু। বর্ষা শুরু হতেই জলমগ্ন পুকুর-ডোবা, খাল-বিল। সেই জলেরই বলি এবার হিঙ্গলগঞ্জের এক পরিবার। উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সাহেবখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের দেউলী গ্রামে ঘটল এক হৃদয়বিদারক ঘটনা — জলে ডুবে মৃত্যু হল একই পরিবারের শাশুড়ি ও বৌমার।

জানা গেছে, বছর একুশের রাখি মণ্ডল পুকুরের  ঘাটে গিয়ে ঢেঁড়স তুলতে নামেন। হাত-পা ধুতে গিয়ে অসাবধানতাবশত পা পিছলে পুকুরে পড়ে যান তিনি। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন তাঁর ৬০ বছরের শাশুড়ি ষষ্ঠী মণ্ডল। বৌমাকে বাঁচাতে তিনিও ঝাঁপ দেন পুকুরে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দু’জনের কেউই সাঁতার জানতেন না। মুহূর্তের মধ্যে দুজনেই তলিয়ে যান জলে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর যখন কোথাও সন্ধান মেলেনি, তখন গ্রামবাসীরা পুকুরে জাল ফেলেন। জালেই জড়িয়ে উঠে আসে শাশুড়ি-বৌমার নিথর দেহ। এমন মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন গোটা এলাকা। এলাকার বাসিন্দা শচীন মণ্ডল, বাবু মণ্ডল ও রিঙ্কু মণ্ডল জানিয়েছেন, “এই পুকুর বর্ষায় প্রায় উপচে ওঠে, জলে নামা বিপজ্জনক। তবু রাখি নেমেছিল। তার পরিণাম এতটা ভয়াবহ হবে, ভাবিনি।”

ঘটনার খবর পেয়ে হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহ উদ্ধার করে। পরে দু’জনকেই নিয়ে যাওয়া হয় নয় নম্বর গ্রামীণ হাসপাতালে, যেখানে চিকিৎসকরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সাহেবখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আশুতোষ কামিলা জানান, “এই ঘটনার জন্য আমরা গভীরভাবে শোকাহত। মৃত পরিবারের পাশে আমরা সবরকমভাবে দাঁড়াব।” ঘটনার পর গোটা পরিবার এবং গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। একসঙ্গে দুই প্রিয়জনকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন রাখির স্বামী বিশাল মণ্ডল। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই স্ত্রীর এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তিনি। বর্ষার অতিবৃষ্টিতে জলপথগুলি বিপজ্জনক হয়ে ওঠায় এমন ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। প্রশাসন ও সাধারণ মানুষকে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার আর্জি তুলেছেন সচেতন মহল।

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/

পুকুরে নেমেছিল বউমা, তাঁকে বাঁচাতে ঝাঁপ দিলেন শাশুড়ি! হিঙ্গলগঞ্জে শাশুড়ি-বৌমার মর্মান্তিক মৃত্যু

Scroll to Top