পলাশ চৌধুরী: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির অন্যতম সম্প্রদায় খাসিয়া। খাসিয়া সম্প্রদায়ের মূল জীবিকা পাহাড়ে পান চাষ। প্রতিবছর ২৩ নভেম্বর খাসিয়া সম্প্রদায় বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ অনুষ্ঠান পালন করে থাকে, তবে এ বছর হচ্ছে না অনুষ্ঠানটি।
এই উৎসব এবার পালন করা সম্ভব না জানিয়ে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফিলা পতমী বলেন, খাসিদের আয়ের উৎস পান ব্যবসায় এবার চরম মন্দা চলছে। খাসিরা পানের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। এজন্য চরম অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগছেন খাসিয়ারা। অনুষ্ঠানটি করতে তাদের দুই লাখ টাকার মতো খরচ হয়। টাকা জোগাড় করতে না পারার কারণে এ বছর অনুষ্ঠান করতে পারছি না। তবে ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি পালন করার চেষ্টা করছি।
ফিলা পতমী জানান, সরকারের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। উৎসবটি করার জন্য সরকার দ্রুত আর্থিক সহায়তা করার উদ্যোগ নিচ্ছে।
খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি জিডিশন প্রধান সুচিয়াং জানান, মূলত অর্থনৈতিক সংকটের কারণেই এবার আমরা এই ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানটি করতে পারছি না। প্রতি বছর ২৩ নভেম্বর এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ এই উৎসবে অংশ নেন। দেশ-বিদেশের পর্যটকেরাও এই অনুষ্ঠানে আসেন।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী এই বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। খাসিয়ারা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে নাচেগানে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন। উৎসবের দিন মাছ শিকার, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খাবার খেয়ে আনন্দে নিজেদের সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করেন। অনুষ্ঠানস্থলে মেলা বসে। বিভিন্ন স্টলে খাসিয়ারা পোশাক, পান, তীর, ধনুক, বাঁশ-বেতের জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন। কিন্তু এবার উৎসবের ভবিষত অনিশ্চিত হয়ে গেল।