হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। জিম্বাবোয়ে সরকার ঘোষণা করেছে, অতিরিক্ত হাতির সংখ্যা কমাতে কিছু হাতিকে মেরে ফেলা হবে এবং সেই মাংস স্থানীয় মানুষদের মধ্যে বিলি করা হবে। এমন এক সিদ্ধান্ত যা নড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশপ্রেমী মহলকেও।

জিম্বাবোয়েতে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক হাতির বাস। প্রথম স্থানে রয়েছে বতসোয়ানা। এক একটি বনাঞ্চলের ধারণক্ষমতা যেখানে ৮০০, সেখানে বাস করছে ২,৫৫০টি হাতি! ফলে বন্যপ্রাণের ভারসাম্য রক্ষা করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির বন্যপ্রাণ সংস্থা ‘ZimParks’।
প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ-পূর্বের এক প্রাইভেট গেম রিজার্ভে ৫০টি হাতিকে হত্যা করে তাদের মাংস স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া হবে। সরকারের বক্তব্য, এটি একদিকে যেমন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করবে, তেমনই ক্ষুধার্ত মানুষকেও খাওয়াবে।

হাতির মাংসের স্বাদ কেমন?
এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে—হাতির মাংস খেতে কেমন? বিশ্বের অধিকাংশ জায়গায় এটি আইনগত ও নৈতিকভাবে নিষিদ্ধ হলেও, যেখানে এটি খাওয়া হয়, সেখানকার মানুষরা জানান, এর স্বাদ গরুর মাংস ও শুকরের মাংসের মতোই, তবে একটু বেশি গেমি (বন্য স্বাদের) এবং হালকা মিষ্টি।
এই মাংস ফাইবারযুক্ত, ধীরে রান্না করা হয়, কোলেস্টেরল কম কিন্তু প্রোটিনে ভরপুর। এতে আয়রন ও বি-ভিটামিন থাকে বেশি। মানে পুষ্টির দিক থেকে দেখলে, হাতি শরীরে ভারী হলেও ডায়েটে বেশ হালকা!
শুধু মাংস নয়, দাঁতের ভাগ্যও নির্ধারিত
হাতিদের দাঁত, অর্থাৎ আইভরি রাজ্যের সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা হবে এবং তা ZimParks-এর কাছে হস্তান্তরিত হবে। তবে আইভরি বেচাকেনা নিষিদ্ধ হওয়ায় এই মূল্যবান দাঁত এখন শুধু সরকারি গুদামেই সাজিয়ে রাখা হবে।
২০২৪ সালের ভয়াবহ খরার সময়ও প্রায় ২০০টি হাতিকে হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৮৮ সালের পর সেটিই ছিল সবচেয়ে বড় পরিমাণ গণশিকার।
বিতর্ক ও প্রতিবাদ
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকর্মীদের মতে, হাতি কেবল ‘বন্যপ্রাণী’ নয়, বরং দেশের পর্যটন শিল্পেরও নায়ক। অনেক বিদেশি পর্যটকই হাতিদের দেখতে আসেন। এখন যদি তারাও প্লেটে চলে আসে, তবে যেমন জঙ্গল খালি হবে, তেমনই পর্যটকও কমবে।
গত পাঁচ বছরে প্রায় ২০০ হাতিকে দেশের বিভিন্ন ন্যাশনাল পার্কে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, তবে সরকারের মতে, তা যথেষ্ট ছিল না। এবার তাই ‘কুলিং অফ’ বা ‘কুঠার অপারেশন’ শুরু হয়েছে সরকারি নজরদারির মধ্যেই।
Kolkata [Calcutta],Kolkata,West Bengal
June 03, 2025 11:48 PM IST