‘নীলা মার্কেট’ থেকে ‘ওয়েস্টিন’, ফুলে ফেঁপে উঠছে হাঁসের অর্থনীতি

‘নীলা মার্কেট’ থেকে ‘ওয়েস্টিন’, ফুলে ফেঁপে উঠছে হাঁসের অর্থনীতি

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

একসময় হাঁসের মাংস ছিল কেবল গ্রামীণ খাবার, এরপর যোগ শহুরে জীবনে। সম্প্রতি অতীতে এমন একটা সময় ছিল ‘শীতের’ মৌসুমে শহরের হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে ঘরোয়া আড্ডা, এমনকি পিঠাপুলির আসরেও হাঁসের পদ অপরিহার্য হয়ে উঠতো। সে দিন পেছনে ফেলে শীত-গ্রীষ্ম এমন কী, বর্ষা সব ঋতুতেই হাঁসের আবেদন এখন প্রশ্নাতীত।

‘নীলা মার্কেট’ থেকে শুরু করে পাঁচ তারকা ‘ওয়েস্টিন’, সব জায়গায় হাঁস এখন অপরিহার্য ‘পদ’। এতে দিন দিন ফুলে ফেঁপে উঠছে হাঁসের অর্থনীতি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০১৩–১৪ অর্থবছরে দেশে হাঁস ছিল প্রায় ৪ কোটি ৮৯ লাখ। গত অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৬০ লাখে। অর্থাৎ ১০ বছরে হাঁস উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি হাঁস পালন করা হচ্ছে দেশের হাওরাঞ্চলে। সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরাঞ্চলেও বাড়ছে এর বাণিজ্যিক চাষ।

সরকারি হিসাবে, হাঁসের বার্ষিক বাজারমূল্য অন্তত সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। তবে খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, প্রকৃত বাজার এর চেয়ে অনেক বড়। ছোট-বড় মিলিয়ে দেশে এখন হাঁসের বাণিজ্যিক খামার ১০ হাজারের বেশি। শীত মৌসুমে হাঁসের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। রাজধানীর পাইকারি বাজারগুলোতে প্রতিদিন বিক্রি হয় ২০ হাজারের বেশি হাঁস।

বর্তমানে প্রতিটি পাতিহাঁসের বাজারদর ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। রাজহাঁস ও চিনাহাঁস বিক্রি হচ্ছে কেজি–প্রতি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। সুপারশপে ড্রেসিং করা হাঁস পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি ৫০০–৬০০ টাকায়।

দেশে হাঁসের বাজার দ্রুত বড় হলেও রপ্তানি এখনো সীমিত। খাতসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পরিকল্পিত উদ্যোগ নিলে আন্তর্জাতিক বাজারেও হাঁসের মাংস রপ্তানির ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।

গ্রাম থেকে শহর, হাওর থেকে রেস্তোরাঁ এমনকি ফাইভ স্টার হোটেল-হাঁস এখন শুধু খাবার নয়, বরং দেশের কৃষি–অর্থনীতির একটি সম্ভাবনাময় খাত। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় রপ্তানির দিকেও নজর দেওয়ার তাগিদ খাত সংশ্লিষ্টদের।

Scroll to Top