নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বানভাসি মানুষ

নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বানভাসি মানুষ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জামালপুরের যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

এতে করে বন্যার কবলে পড়েছে জেলার ইসলামপুর , দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ ও বকশিগঞ্জ উপজেলার ৪২টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। প্লাবিত হচ্ছে একের পর এক গ্রাম। বসত ঘরে পানি ঢুকায় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন বানভাসি মানুষ। ঘরের আসবাবপত্রসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে উঁচু জায়গা ছুটছেন তারা।

অনেকের ঘরে থাকা খাবার শেষের দিকে। খাবারের সংকটও দেখা দিয়েছে বন্যা কবলিত এলাকায়।

নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বানভাসি মানুষ

শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বন্যার্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। কথা হয় বানভাসি মানুষদের সাথে।

ইসলামপুর উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের বীরনন্দের পাড় এলাকায় জায়েদা ও আশরাফ দম্পতি কান্না জড়িত কণ্ঠে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘সারাটা জিবন কষ্ট করলাম সুখ পাইলাম। প্রতিটি বছর আমাদের এভাবেই কষ্ট করতে হয়। জায়গা জমি কোন কিছুই নেই পরের জমিতে ঘর তুলেছিলাম। আজ বানের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। জিনিস পত্র নিয়ে পাশের উঁচু জায়গায় যাচ্ছি।’

একই এলাকার কবিতা নামে এক গৃহিণী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘তিন দিন ধরে ঘরে বানের পানি উঠেছে। কষ্ট করে হলেও ছাওয়ার পাওয়ার নিয়ে ঘরেই ছিলাম। আজ আর পারছি না। এক মাত্র খাওয়ার সম্ভল কাঁচা ধান নিয়েই চলে যাচ্ছি।’

বেলগাছা ইউনিয়ের মিজান নামে এক কৃষক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘খুব কষ্টে আছি ভাই। তিন দিন ধরে কাজে যাই না। বউ, ছেলে-মেয়ে না খেয়ে আছে। ১ কেজি চাল আর ডাল এনেছিলাম। খেয়ে শেষ হয়ে গেছে। আজ সকাল থেকে না খেয়ে আছি।’


জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৪ উপজেলার ৪২টি ইউনিয়নের দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি। বন্ধ রয়েছে ১৩৫টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান।

ইসলামপুর উপজেলা প্রকল্পবাস্তবান কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ত্রাণ হিসেবে ১২০ টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে ৫০ টন বিতরণের জন্য দেয়া হয়েছে।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রকল্পবাস্তবান কর্মকর্তা মো: মাজাহারুল ইসলাম বলেন, ৪১৫টি পরিবার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। ত্রাণ হিসেবে ৩০ টন চাল ও ২৭৫ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. শফিকুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোতে চাহিদা মোতাবেক ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে।

Scroll to Top