যুক্তরাষ্ট্র সরকার পর্যটন বা ব্যবসার উদ্দেশ্যে (বি১/বি২) ভিসার আবেদনকারীদের কাছ থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত জামানত আদায়ের একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিজ্ঞপ্তির উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ১২ মাস মেয়াদি এই পাইলট প্রগ্রামের লক্ষ্য এমন দেশগুলোর নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণ করা, যেখান থেকে আসা ভিসাধারীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নির্ধারিত সময়ের বেশি থাকার (ওভারস্টে) হার বেশি, অথবা যেসব দেশের নিরাপত্তা যাচাই ও স্ক্রিনিং ব্যবস্থা দুর্বল বলে বিবেচিত হয়।
প্রতিবেদন অনুসারে, এই কর্মসূচি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবৈধ অভিবাসন রোধের এজেন্ডাকে সামনে রেখে নেওয়া আরো একটি পদক্ষেপ।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিনেই ট্রাম্প এই উদ্দেশ্যে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। তবে বিজ্ঞপ্তিতে কোন কোন দেশ এই কর্মসূচির আওতায় আসবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, যেসব বিদেশি পর্যটন বা ব্যবসা (বি১/বি২) ভিসার আবেদন করছেন এবং যারা ওভারস্টে প্রবণ দেশগুলোর নাগরিক, বা যেসব দেশে স্ক্রিনিং ও ভেটিং ব্যবস্থা দুর্বল, কিংবা বিনিয়োগের বিনিময়ে নাগরিকত্ব দিয়ে থাকে—সেসব আবেদনকারীর ভিসা পেতে হলে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ডলারের জামানত দিতে হতে পারে। যিনি ভিসা প্রদান করবেন, সেই কনস্যুলার কর্মকর্তা এই জামানতের প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করবেন।
বিবিসি জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ট্রাম্প প্রশাসন কয়েকটি মানবিক অভিবাসন কর্মসূচি বাতিল করেছে, যেগুলোর আওতায় কিছু নির্দিষ্ট দেশের অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিল। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতিমধ্যে ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন এবং আরো সাতটি দেশের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
এ ছাড়া ট্রাম্প প্রশাসন শত শত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কলেজ ক্যাম্পাস থেকে অনেককে হঠাৎ করে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে, কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কতা বা আপিলের সুযোগ না রেখেই। পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, যারা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল, মূলত তাদেরই লক্ষ্য করা হচ্ছে।
তবে ইমিগ্রেশন আইনজীবীরা বলছেন, যাদের কোনো ফৌজদারি রেকর্ড রয়েছে কিংবা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের মতো তুলনামূলক ছোট অপরাধেও অনেকের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ফিলিস্তিনপন্থী কার্যক্রমে জড়িত থাকা অনেককেও লক্ষ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।