আনিস উদ দৌলা বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান শিল্পপতি ও করপোরেট নেতা, যিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশের ব্যবসায় ও শিল্পখাতে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তার নেতৃত্বে গড়া এসিআই গ্রুপ খাদ্যপণ্য, পানীয়, সিমেন্ট, ইস্পাত, টেক্সটাইল, রিয়েল এস্টেট এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ নানাবিধ খাতে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে তিনি যে ভূমিকা রেখেছেন, তা দেশের ব্যবসায়িক ইতিহাসে অনন্য। তার নেতৃত্বে এসিআই একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠেছে, যেখানে গুণগত মান, উৎপাদনশীলতা এবং গ্রাহকসেবাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়।
আনিস উদ দৌলার দীর্ঘ কর্মজীবনের সূচনা হয়েছিল ব্রিটিশ অক্সিজেন গ্রুপের মাধ্যমে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং কেনিয়ায় ২৭ বছর তিনি এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এর মধ্যে টানা ১২ বছর তিনি বাংলাদেশ অক্সিজেন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি বাংলাদেশে ব্রিটিশ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আইসিআই গ্রুপের তিনটি কোম্পানির গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। দুই ব্রিটিশ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে টানা ৩২ বছরের অভিজ্ঞতা তাকে বহুজাতিক সংস্কৃতি, ব্যবস্থাপনার শৃঙ্খলা এবং গুণগত মান রক্ষার নীতি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করেছে। যার অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি এসিআইকে বহুমুখী একটি শক্তিশালী শিল্পপ্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করান।
ব্যবসায়িক নেতৃত্বের পাশাপাশি আনিস উদ দৌলা দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ১৯৭৭, ১৯৭৮, ১৯৯৫ এবং ২০১০ সালে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এমসিসিআই), ঢাকা’র প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৭৫-৭৬, ১৯৭৬-৭৭, ১৯৯১-৯২, ১৯৯২-৯৩, ২০০৩-০৪ এবং ২০০৪-০৫ মেয়াদে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট, পায়োনিয়ার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশের পরিচালক। পাশাপাশি তিনি ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আনিস উদ দৌলা শুধু একজন সফল শিল্পপতি নন, বরং একজন দূরদর্শী নেতা যিনি বহুজাতিক করপোরেট সংস্কৃতি, শিল্প সম্পর্ক উন্নয়ন, শিক্ষাবিস্তারে অবদান এবং ব্যবসায়িক সংগঠনে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একটি শক্তিশালী ভিত্তি দিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি রাজু আলীমের প্রযোজনা ও পরিকল্পনায় এ সময়ের আলোচিত টক শো টু দ্য পয়েন্টে আসেন এবং তার দীর্ঘ পথচলা, রাজনীতি এবং দেশ নিয়ে তার ভাবনা এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দীপ্তি চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে আনিস উদ দৌলা তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং মুক্তিযুদ্ধের আগের সময়টির স্মৃতিচারণ করেন। বলেন, আমি জয়েন করি ১৯৬০-তে পাকিস্তান অক্সিজেনে, চট্টগ্রাম ব্রাঞ্চে। তখন বাঙালিদের খুবই ছোট ছোট বিজনেস ছাড়া কিছু ছিল না। ওই এ কে খান গ্রুপ যেমন ছিল, তখন ওরাই ছিল বড়। তাছাড়া আদমজি, স্প্যানি এরা তো সব ডমিনেট করত সবসময়। তো সেখানে আমরা যে অক্সিজেন সাপ্লাই করতাম, সেটা যেত মাল্টিন্যাশনাল কতগুলো ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি যারা ছিল তাদের কাছে, তারপরে ওইসবের কাছে। বাঙালিদের কাছে খুব কমই যেত এবং খুব অল্প কোয়ান্টিটি। এটাতেই বোঝা যেত বাঙালিদের কন্ট্রিবিউশন অর পার্টিসিপেশন ইন দা ইকোনমি অফ দা কান্ট্রি, খুবই অল্প ছিল। এটা আস্তে আস্তে বাড়ল। এবং যখন স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়টা আসলো তখন বাঙালিরা মোটামুটি সচেতন যে তাদের যথেষ্ট শেয়ারটা তারা পাচ্ছে না। সুতরাং তারা আন্দোলন করে আমাদের দেশটাকে স্বাধীন করলো।
পাকিস্তান শাষণের সময়কার স্মৃতিচারণ করে আনিস উদ দৌলা বলেন, আমরা তখনকার পাকিস্তানিদের বিজনেসটা দেখেছি। তাদের খুব সিনসিয়রিটি ছিল, তাদের সিঙ্গেল মাইন্ডেডনেসটা ছিল। তাদের এক্সপ্লয়েটিভ নেচার আমি বলব না। দেখেন প্রফিট ইজ নট এক্সপ্লয়েটেশন। প্রফিট ইজ ফর গ্রোথ, প্রফিট ইজ ফর কন্টিনিউয়েশন। তো তাদের সেই ডিমান্ডটা ছিল। আই ডোন্ট থিংক তারা শোষক ছিল না। তারাও ছিল আমাদের মতনই ভালো মানুষ। তাদের সময় পাকিস্তান ওয়াজ স্ট্রং। এখন গভর্নমেন্টের পলিসির তুলনায় বাঙালিরা যথেষ্ট সুযোগ পাচ্ছে না। তখন বাঙালিদেরও সে সচেতনতার অভাব ছিল, আবার তাদেরও হয়তো কিছুটা বৈষম্য ছিল কিন্তু আমরা ক্যাপেবল কম ছিলাম, এটা ঠিক। পাকিস্তানিরা ছিল শিক্ষিত, পাকিস্তানিরা ছিলো মোর মডার্ন। আমরা বাঙালি। বাই ট্রেডিশন আমরা ছিলাম কৃষক, আমরা ছিলাম লোক-লেভেলের আর্টিজান। সুতরাং আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ডটা ছিল খুবই ইম্পভারিশড। পাকিস্তানে যখন আসলাম, আদমজি-স্প্যানি ওয়ার নট ইম্পভারিশড দে ওয়ার রিয়েলি বিগ হার্টেড, তাদের আইডিয়াসগুলো ভালো। তারপরে আমরা যে স্বাধীন হলাম, সেটা তো আমাদের ছাত্রদের ত্যাগের মধ্য দিয়ে। আমরা যে স্বাধীনতাটা পেলাম, এটা হচ্ছে আমাদের বিশেষ একটা অর্জন এবং আমাদের মুক্তি। পাকিস্তানের থেকে ব্রিটিশ সব কিছু নতুন। আমরা সেটাকে ঠিক মতন ধরে রাখতে পারিনি।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের বানিজ্যিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, তখন প্রচুর স্ট্রাগল ছিল। আমরা তো জানিও না কী করতে হবে, কোথা দিয়ে লোন নিতে হবে, কী করে করতে হবে। সবই আমাদেরকে শেখাতে হতো। ইপিআইডিসি (ইস্ট পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন) ছিল আমাদের দেশের কেন্দ্রবিন্দু যেখানে ইন্ডাস্ট্রিটা শেখানো হতো। তো সেটা থেকে আস্তে আস্তে আমরা শিখেছি এবং বাঙালিরা খুব ফাস্ট শিখতে পারে। আমাদের স্বাধীনতা যখন হলো, তারপরে ক্রমশই আমরা এগিয়ে গেলাম এবং তখনকার যে স্ট্রাগল, যারা করেছে তাদের অনেক নতুন কিছু শিখতে হয়েছে কিন্তু তারা শিখেছে। যেমন স্যামসন চৌধুরী ফার্মাসিউটিক্যালের সবচেয়ে বড়। তারপরে আমজাদ সাহেব এদের যে কন্ট্রিবিউশনটা ছিল, এরা তারপরে মনজুর ইলাহী সাহেব রিসেন্টলি মারা গেলেন এদের কন্ট্রিবিউশনটা হচ্ছে নতুন করে শেখানো। পাকিস্তানিরাও কম্পিটিশন করেছে, তারপরে এখন একটা ভ্যাকিউম সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে ফরেন কোম্পানিরা আসতে শুরু করলো, তাদের সাথে কম্পিউট করে। এটা তো সোজা ব্যাপার না। এবং এরা যে দিনরাত কাজ করেছে, এদের নেশন বিল্ডিং-এ এদের যে কী অবদান, সেটা আমাদের রিয়ালাইজ করা উচিত।
বিশ্ব বানিজ্যিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অগ্রযাত্রার বিষয়ে দেশের অন্যতম প্রধার এই শিল্পোদ্যোক্তা বলেন, মানুষের উন্নতি করার তো কোন শেষ নাই, সেলফ ডেভেলপমেন্টের কোনো শেষ নাই এবং আমরা সেটা করে চলেছি। আমাদের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে উই আর ভেরি প্রাউড। চিন্তা করেন আপনি বাংলাদেশের মতন একটা দেশ, ওয়ার্ল্ডের নাম্বার টু ইন এক্সপোর্ট, ইন্ডিয়া আমাদের সাথে পারে না। এটা আমাদের কত বড় একটা গর্বের কথা এবং এটা কার জন্য হয়েছে? এইসব উদ্যোক্তাদের জন্য হয়েছে। সুতরাং এদেরকে একনলেজ করা উচিত। দেশটা শুধু পলিটিশিয়ানরাই চালায় না, দেশটা বিজনেসম্যানরা চালায়। তারা ট্যাক্স দেয়, তাদের ট্যাক্সেই তো সব চলে। ট্যাক্সটা আদায় করাও তাদের সমস্ত কিছু। যেমন ধরেন, ভ্যাট। আপনি ভোক্তা, ভ্যাট আপনার থেকে আদায় করে আমরা গভর্নমেন্টকে দিয়ে দিচ্ছি। উই আর জাস্ট এ কালেক্টিং এজেন্ট উইদাউট এনি কমিশন। সব কাজে কিন্তু একটা কমিশন পাওয়া যায়, আমরা যে এই ভ্যাটটা কালেক্ট করে দিচ্ছি, এটার কিন্তু কোনো কমিশন দেয় না গভর্নমেন্ট। যাই হোক, এরকমভাবেই চলে। তো আমাদের যদি এক্সপেরিয়েন্সের কথা বলেন এর কী বা কীভাবে এটা হলো, তাহলে আমি বলব যে আমরা অনেক তাড়াতাড়ি শিখতে পেরেছি, অনেক সুন্দর করে অনেক কাজ আমরা করছি। কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি ইজ এ নিউ আইডিয়া। সেটা আমরা একইসাথে শুরু করেছি সবাই। এবং প্রত্যেকটা কোম্পানিরই একটা এঙ্গেল আছে। আমার কোম্পানির তো বটেই। মানি ইজ নট এভরিথিং। মানি ইজ নট অ্যাট অল ইম্পর্টেন্ট। হোয়াট ইজ ইম্পর্টেন্ট ইজ কাস্টমার স্যাটিসফ্যাকশন। আল্টিমেটলি মানি আসবেই আপনার। ইউ হ্যাভ ফুলফিলড এ নিড, এ ভ্যাকিউম, এ সার্ভিস নিডেড। আপনি সেটাতে স্টেপ ইন করে যে সাকসেসফুল হলেন, সাকসেসফুল মানে হচ্ছে আপনার কাস্টমার আপনার কাছে আসছে এবং এটা তো একটা সার্ভিস, নট জাস্ট মানি।
রাজনীতিতে বানিজ্য এবং ব্যবসায়ীদের রাজনীতিতে আসা প্রসঙ্গে এসিআই এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বলেন, আমি মনে করি ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবে। পলিটিশিয়ানরা পলিটিশিয়ান হবে, এটা ব্যবসা না। পলিটিক্স একটা আর্নিং-এর সোর্স না। পলিটিক্স হচ্ছে একটা সার্ভিস।
ব্যবসায়ীরা রাজনীতিতে জড়িত হবার বিষয়ে তিনি বলেন, করাপশন। দে জাস্ট টেক এডভান্টেজ অফ দা অপরচুনিটি হাউ টু গ্রাব, হাউ টু সাক দা নেশন। বিজনেসম্যান আনফরচুনেটলি ডাইভার্টেড দেয়ার অ্যাটেনশন ফ্রম বিজনেস এন্ড মানি মেকিং। বিজনেস এন্ড মানি মেকিং ডিপেন্ড অন হাউ ইউ লুক অ্যাট ইট। মানি মেকিং কন্টিনিউস দা সাসটেইনেবিলিটি অফ দা কোম্পানি, ইউর অ্যাক্টিভিটি। অলসো, নিড ফর সাম অ্যাডিকুয়েট রিটার্ন অফ ইউর ইনভেস্টমেন্ট, আদারওয়াইজ হু উইল বি ইন্টারেস্টেড? সেটা যেমন ঠিক, এক্সেসিভ প্রফিট করাটাও ঠিক না। আবার এক্সেসিভ প্রফিট করা নিশ্চয়ই অপরচুনিটি ওয়াইজ ভালো। বিজনেসম্যান মাস্ট ডু বিজনেস। পলিটিশিয়ানস দেশের সেবা করার জন্য মাস্ট বি অনেস্ট এন্ড দে ক্যান ডু এভরিথিং ইজ রিকোয়ারড। ফর নট ফর দা বিজনেসম্যান, বাট ফর দা পিপল ফ্যাসিলিটেটিং বিজনেসম্যান টু সাপোর্ট পিপলস নিড। আমরা যেমন একটা করেছি, স্বপ্ন। স্বপ্ন ইজ আওয়ার রিটেইল চেইন। এতে এখন প্রায় ৭৫০টির মতন আউটলেট হয়েছে। আমাদের একটা ইচ্ছা আছে, সাড়ে তিন হাজার করলে পরে আপনি আপনার বাসা থেকে একটু বের হলে পরেই একটা দোকান পাবেন। এবং এক ছাদের নিচে সবকিছু। হ্যা, ওই যে সেভেন-ইলেভেনের যেরকম, ওরকম টাইপের আমরা করার চেষ্টা করছি। ইট ইজ নট ইজি, উই লস্ট লট অফ মানি। আমাদের শেয়ারহোল্ডাররা আমাদেরকে সেটা সাপোর্ট দিয়েছে এবং এই মানি লসটাকে তারা লস হিসেবে দেখে না, আমরা দেখি এটাকে ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে। এবং এখনো লসে যাচ্ছি আমরা, কিন্তু ব্রেক ইভেন মোটামুটি হয়ে গেছি। কিন্তু সামডে দিস ইজ গোয়িং টু বি গোল্ড মাইন এন্ড দিস ইজ এ সার্ভিস টু দা পিপল। আমরা যে এই স্যাক্রিফাইসটা করছি, এই যে লসটা করছি, উই আর ডুইং ইট হ্যাপিলি। উই আর ডুইং ইট হ্যাপিলি বিকজ উই নো সামডে উইল লট রিওয়ার্ড এবং এটি দেশ সেবা, আপনাদের সেবা করার জন্যই আমরা এটা করছি।
দেশ থেকে অর্থ পাচার, রিজার্ভ পরিস্থিতি, ড. মুহাম্মদ ইউনুসের দায়িত্ব এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা এসে চলে গিয়েছিল পলিটিক্সের মধ্যে। তারা সেটা এক্সপ্লয়েট করে দেখেছেন টাকা পাচার হয়েছে। আমাদের অর্থনীতি কত বিরাট একটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এখন যারা চালাচ্ছেন, তারা বিজ্ঞ ব্যক্তি, তারা অনেক নলেজ রাখেন এবং তারা চেষ্টা করছেন জিনিসটাকে সমন্বয় করার। আমরাও টানা-পোড়েনের মধ্যে অনেক কষ্টের মধ্যে কাজ করছি। কিন্তু আমরা কাজ করছি উইথ অল দা ডেডিকেশন, অল দা ইন্টারেস্ট। আল্লাহর মর্জি, আমরা সাকসেসফুল হব। কিন্তু এই সরকার যা করছে এই ডিফিকাল্ট টাইমে, দে আর ডুইং এ মিরাকুলাস জব। বর্তমানে আমাদের দেশপ্রধান এবং অন্য সবাই যারা আছেন, তাদের কিন্তু ভেস্টেড ইন্টারেস্ট নাই বললেই চলে। বিশেষ করে দেশের উন্নতির সাথে তাদের ভেস্টেড ইন্টারেস্ট হচ্ছে। দেশের উন্নতিটাই তাদের ইন্টারেস্ট। এই যে সুযোগটা এটা কিন্তু আর পাওয়া যাবে না।
ডক্টর ইউনুস হ্যাজ নো ভেস্টেড ইন্টারেস্ট। আই থিংক ইটস আ বিগ অপরচুনিটি। আমি হলে কী করতাম? আমি হলে বলতাম, ‘আজকের থেকে আমাকে যখন দায়িত্ব দিয়েছ, তখন কিছুতেই তুমি কোন ডিমান্ড কিন্তু রেজ করতে পারবা না। আমাকে এক বছরের জন্য একেবারে শান্তিতে থাকতে দাও। আল্লাহর ওয়াস্তে আমি যা করব করব, তারপরে আমারে ফাঁসি দিও কিন্তু আমি যা করব, আমার কাজের মধ্যে বাধা দিও না। আইম ডুইং ইট ফর অ্যাজ আই থিংক বেস্ট। আমি এটার মধ্যে কোনো কম্প্রমাইজ করতে চাই না। দিস ইজ মাই পলিসি এন্ড আই উইল।
স্টুডেন্টদেরকে যদি বলা হয়, ‘প্লিজ গো টু ইওর স্টাডি’। তোমরা এত স্যাক্রিফাইস করেছ, আমার তো কান্না আসে তোমাদের জন্য, তোমাদের যে চোখ নষ্ট হয়েছে, তোমাদের যে বুকে গুলি লেগেছে, আমার কান্না আসে। কিন্তু ইট নট ফর ইউ টু টেল হাউ টু রান কান্ট্রি ফর আস। না হলে তো বাকি ভবিষ্যৎটাও নষ্ট হয়ে যাবে। পলিটিকাল পার্টি করো। ইউ বিকামিং অ্যানাদার এক্সপ্লয়েটিভ পার্টি। ইউ ট্রাইং টু মেক মানি। ইওর পার্টি ইজ নট সেইং আওয়ার পার্টি উইল নট হ্যাভ এনিবডি ইন এ পজিশন অফ বেনিফিট। তো তোমাদের আর অন্যদের মধ্যে ডিফারেন্সটা কী?
আমদানি-রপ্তানির চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমদানিকারক, রপ্তানিকারক সবই তো ব্যবসা। এখন ডলার নাই। কিছু সময় আগে ফরেন এক্সচেঞ্জের অভাব ছিল। কেননা দেশের উপর আস্থা কম ছিল। এখন সে আস্থাটা বাড়ছে, দেখেন ফরেন এক্সচেঞ্জও আসছে।
এইসব লেনদেন নির্ভর করে আমাদের বিষয়ে বিশ্বের পারসেপশন কী? আমাদের গভর্নেন্স কী? এইসবের ওপরে। আমরা আমদানি-রপ্তানি যাই করছি, আমরা এখন আস্তে আস্তে করতে পারছি। আগে এলসি যেমন খুলতে পারত না, কারণ ফরেন এক্সচেঞ্জ ছিল না, এখন সেগুলি পারছে। মোটামুটি আস্তে আস্তে হচ্ছে।
বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশের পরসেপশন বাইরে অনেকটা খারাপ। আবার সিম্প্যাথিও আছে। যে দেশের লোক চুরি করে পালিয়ে গেল, গভর্নেন্স করে পালিয়ে গেল, এটা তো ঠিক হলো না। খুবই খারাপ। আবার সিম্প্যাথিও আছে। আমরা বেসিক্যালি বাঙালিরা ভালো মানুষ। আমাদেরকে সবাই ভালোবাসে। যখন চেনে আমাদেরকে, তখন আমাদেরকে ভালোবাসে। আমাদের দুই একজন হয়তো চোর হতে পারে। এই বিশ্বাসটা অর্জন করা তো কঠিন। তাদেরকে কনভিন্স করতে হয়। আল্লাহর মর্জিতে আমাদের সাথে যতগুলি পার্টনার আছে, সবাইকেই আমরা কনভিন্স করে তারা সুন্দর কাজ করে যাচ্ছে, কোনো ভয় নেই। তাদের ইমেজটা আমাদের ক্রিয়েট করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তরুণরা যারা উদ্যোক্তা হতে চান তাদের সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে ওঠার বিষয়ে তিনি বলেন, সফল হওয়ার যদি ফর্মুলা আমার থাকতো, তাহলে আমি কিন্তু বিরাট হয়ে যেতাম। নোবডি হ্যাজ এ মনোপলি অফ উইজডম। একটা মানুষের উদ্যোগ নিতে হবে। সফল হব কিনা আল্লাহই জানেন। আমার যদি সততা থাকে আর আমার যদি মেধা থাকে, তাহলে পরে আমার সফল হওয়ার চান্সটা অনেক বেশি। প্রোভাইডেড আই অ্যাম নট ডিসঅনেস্ট, প্রোভাইডেড আই ডোন্ট লুজ ট্রাস্ট, প্রোভাইডেড মাই সাকসেস ডাজেন্ট গো ইনটু মাই হেড। আমার গাড়ি এখন মার্সিডিজ না হলেই চলবে না। আমার একটা মার্সিডিজ আছে, কিন্তু সেটা পুরনো, সেকেন্ড হ্যান্ড একটা শখ করে কিনেছিলাম। কিন্তু মার্সিডিজ কেনা আমার শেয়ারহোল্ডারের টাকা দিয়ে, বর্তমানে এই যে লাক্সারি ট্যাক্স দিয়ে কেনা।
নতুন প্রজন্মের প্রতি আনিস উদ দৌলা বলেন, যেটা করবেন, সেটা যেন আপনার পছন্দের কাজ হয়। সো দ্যাট ইউ ক্যান ওয়ার্ক উইথ লট অফ হ্যাপিনেস। আমার যেরকম বিজনেসটা, আই ডু ইট উইথ হ্যাপিনেস। আমি যাই কাজ করি না কেন, আমার কষ্ট হয় না কোনো সময়, আমার ক্লান্তি আসে না। সাকসেসটা যেন মানুষের মাথায় না যায়। যদি আমি স্ট্রেট অ্যাওয়ে দুটো তিনটে করে বলি, সেটা হচ্ছে যে ইউর সাকসেস শ্যুড নট গো ইনটু ইউর হেড। নম্রতা থাকতে হবে, বিনয় থাকতে হবে, মানুষের হাম্বলনেস থাকতে হবে এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে। দ্বিতীয় হচ্ছে যে, নাথিং লাইক হার্ড ওয়ার্ক। ওয়ার্ক শুড বি ইওর লেজার। টু মি অনেস্টলি স্পিকিং, ওয়ার্ক ইজ মাই লেজার। আমি যখনই একটু সুন্দর সময় পাই, আমি একটু গান শুনি না। স্টিল আমি এই যে এই কাজ করি, আমার বাসায় দেখবেন কত প্যাড আছে, সব হাফ রিটেন। দুই একটা ওয়ার্ড লিখেছি। হয়তো যেখানে সেখানে, সবখানেই কোন না কোন কোনাতে কাগজ আছে আমার। বিছনার পাশে রাত্রিরে অন্ধকারে লেখার জন্য কাগজ আর পেন্সিল রাখা আছে এমন জায়গায় যে আমি যেন সেটা চট করে পাই। এমন কোনো একটা আইডিয়া আসলো, এ আইডিয়াটা মাথার মধ্যে না রেখে লিখে রাখলাম যাতে এর চিন্তাটা না থাকে। পরের দিন আমি দেখি সেটা। সো নো শর্টকাট টু হার্ড ওয়ার্ক। ট্রাই ট্রাই এন্ড ট্রাই এগেইন। ইউ শুড বি ইনক্রিমেন্টাল ইন ইউর ইমপ্রুভমেন্ট। এভরিডে দ্যাট ইউ ওয়ার্ক। যেমন আপনি পরিচালনা করেন, আপনি আজকের থেকে যেটা শিখলেন আমার সাথে পরিচালনা করে, আপনার কালকের এই পরিচালনাটা আরেকটু ইমপ্রুভ করলো। তারপরের দিন আরেকটু ইমপ্রুভ করলো। এইটা হচ্ছে কন্টিনিউয়াস ইমপ্রুভমেন্ট। এটা আপনি কোনো সময় হারাবেন না। মনে করবেন না যে আমি বিরাট কিছু হয়ে গেছি। বিরাট কিছু আপনি হবেন, সেটা তো আমরা দেখব। কিন্তু আপনি নিজের কাছে নিজেকে বলবেন যে আমার আরেকটু ভালো করা দরকার, আরেকটু আমি ইমপ্রুভ করব। ট্রাই ট্রাই এন্ড ট্রাই এগেন। এন্ড অলওয়েজ ট্রাই টু ডু বেটার দ্যান ইয়েস্টারডে। এটা যদি হয়, আমার মনে হয় ৯০ পারসেন্ট সাকসেস কামস ফ্রম দিস। কিন্তু ব্যবসা ইজ অলওয়েজ আনসার্টেন। আপনার তবুও ডিসঅ্যাপয়েমেন্ট হতে পারে, তবুও ফেইলিয়ার হতে পারেন। বাট ফেইলিয়ারের থেকে যে লেসন নেবেন, সেটা দিয়ে যদি ভবিষ্যৎকে গড়ে তোলেন, তাহলে হয়তো সুন্দরভাবে চলবে।
(এই বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)