<![CDATA[
দেড় মাসেও বন্ধ হয়নি সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি, মর্টারের গোলা নিক্ষেপ ও হেলিকপ্টার থেকে গোলা ছোড়া। দিনে থেমে থেমে কয়েকটি গোলাবর্ষণ হলেও এখন রাতেও হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া হচ্ছে গোলা। তাই কোনোভাবেই আতঙ্ক কাটছে না সীমান্তের বাসিন্দাদের। এরই মধ্যে আতঙ্কে অনেকেই বন্ধ করে দিয়েছেন দোকানপাট। আর জরুরি মুহূর্তে প্রয়োজন পড়লেই ৩০০ পরিবারকে সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
তুমব্রু সীমান্তের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আমিন বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলা মর্টারের গোলা কিছুদিন আগে এসে পড়েছিল তার বাড়ির খুব কাছে। তবে মর্টারের গোলা বিস্ফোরিত না হওয়ায় কেউ হতাহত হয়নি। কিন্তু এই আতঙ্ক কোনোভাবেই কাটছে না তার। আর এখনো অব্যাহত রয়েছে গোলাগুলি ও গোলাবর্ষণ।
মোহাম্মদ আমিন নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি। কখন যে আবার গোলা এসে পড়বে। কারণ, প্রতিদিনই গোলাগুলি ও মর্টারের গোলা ছোড়া হয়। দিনের পাশাপাশি রাতেও মর্টারের গোলা ছোড়া হয়। রাতে ঘুমও হয় না আতঙ্কে। কখন যে আমাদের মাথার ওপর পড়ে।’
আরও পড়ুন: ওপারে গোলাগুলি, এপারে উৎকণ্ঠায় বন্ধ কাজকর্ম
তুমব্রু বাজার; যেখানে সবসময় থাকত মানুষের আনাগোনা। কিন্তু সেই বাজার এখন প্রায় জনশূন্য। নেই মানুষের ভিড়, অনেক দোকানপাট বন্ধ। সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ না হওয়ায় অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন স্বজনদের বাড়িতে। তবে এই গোলাগুলি কবে বন্ধ হবে জানেন না কেউ; তাই উৎকণ্ঠায় এলাকাবাসী।
তুমব্রু পশ্চিমকুল এলাকার শিক্ষার্থী আমেনা বেগম বলেন, ‘গোলার বিকট শব্দে লেখাপড়া করতে পারছি না। প্রতি মুহূর্তে মনে হয় এই বুঝি গোলা এসে আমাদের ঘরে পড়বে। এখানে আমাদের জীবন অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন চা-দোকানি ইব্রাহীম বলেন, গোলাগুলির কারণে অনেকেই দোকানপাট বন্ধ করে অন্যত্র চলে গেছে। আবার অনেকেই আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: নিরাপদ জীবনে বসতভিটা ছাড়তেও রাজি ঘুমধুম সীমান্তের বাসিন্দারা
আর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান, শুধু জরুরি মুহূর্তেই তালিকার ৩০০ পরিবারকে সরিয়ে আনা হবে। অন্যথায় তারা নিজ বাড়িতেই অবস্থান করবে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, সীমান্তের পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পগুলোতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গ্রুপের তুমুল সংঘর্ষ হয়। তখন গুলি বাংলাদেশ ভূখণ্ডে এসে পড়তে পারে। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে জরুরি মুহূর্তে সীমান্তের বাসিন্দাদের সরিয়ে আনা হবে।
এদিকে শুধু তুমব্রু সীমান্তের ৩০০ পরিবারই নয়, কক্সবাজার উখিয়া সীমান্তেও অতি ঝুঁকিতে থাকা ১০০ পরিবারের তালিকাও হয়েছে। জরুরি মুহূর্তে প্রয়োজনে তাদেরও সরিয়ে এনে থাকা এবং খাবারের ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।
]]>