দাফনের ১২ দিন পর লাশ উত্তোলন | চ্যানেল আই অনলাইন

দাফনের ১২ দিন পর লাশ উত্তোলন | চ্যানেল আই অনলাইন

ফেনীর দাগনভূঞায় দাফনের ১২ দিন পর আদালতের নির্দেশে আবদুল গফুর ভূঞা নামের এক ব্যক্তির লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। বুধবার (১২ জুন) জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটস আবদুর রহমানের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়।

এ সময় দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাশিম, উপজেলা মেডিকেল অফিসার ডা. আসিফ ইনতেছার, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাসেল মিয়া, নিহত গফুরের ছেলে লিয়াকত হোসেন রাজু, রাকিব হোসেন ও রিয়াদ হোসেনসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার (১১ জুন) জেলার আলোচিত গফুর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দাগনভূঞা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাসেল মিয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশটি উত্তোলনের নির্দেশ দেন দাগনভূঞা আমলি আদালত।

জানা যায়, গত ২৯ মে ফেনীর দাগনভূঞা পৌর শহরের হাসপাতাল রোডের অভিরামপুর এলাকায় ছয়তলা একটি ভবন দখল করতে তাণ্ডব চালায় স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। ওই সময় হামলাকারীরা ভবনটির বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যসের লাইন কেটে দেয়। এতে আহত মালিক আবদুল গফুর ভূঞা ১ জুন মারা যাওয়ার পর ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে।

পরে গত ৪ জুন নিহতের ছেলে রিয়াদ হোসেন একই উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মামুনসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ফেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দাগনভূঞা আমলি আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। দাগনভূঞা আমলি আদালতের বিচারক ফারহানা লোকমান মামলাটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু করে আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য দাগনভূঞা থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, দাগনভূঞা উপজেলার সদর ইউনিয়নের জগতপুর এলাকার কাতার প্রবাসী আবদুল গফুর প্রায় ১৫ বছর আগে স্থানীয় পৌর শহরের হাসপাতাল রোডের পলাশ চন্দ্র সাহার কাছ থেকে ৬ শতক জায়গা ক্রয় করেন। ওই জায়গায় ২০১৩ সালে ছয়তলা ভবন নির্মাণ করেন। সম্প্রতি রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জয়নাল আবদীন মামুনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ইকবাল হোসেন ওই ভবনের জমির মালিকানা দাবি করেন। এরপর গফুরকে উচ্ছেদ করে বাড়িটি দখলে নিতে হুমকি-ধামকি দেন চেয়ারম্যান মামুনও।

গত ২৯ মে দুপুরে স্থানীয় উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহণ চলাকালে ৪০ থেকে ৫০ জন যুবক ভূঞা ম্যানশনে অতর্কিত হামলা চালায়। তারা প্রথমে সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলে। এরপর সবকটি মিটার ভেঙ্গে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ও পানির মোটর খুলে নিয়ে যায়। নিচতলার বাসার বাইরে দরজা আটকিয়ে দ্বিতীয় তলায় গফুর ভূঞার বাসায় হানা দেয়। কিছু বুঝে উঠার আগেই গফুর ভূঞা, তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, পুত্রবধূ ও দেড় বছর বয়সী নাতনিকে বেদম মারধর করে। এ সময় আসবাবপত্র ভাঙচুর ও তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।

গফুরের ছেলে লিয়াকত হোসেন রাজু বলেন, আসামীরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে। আমাদের হুমকি দিচ্ছে মেরে ফেলবেন। প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চাইলেও কিছু করেনি। আদালতে মামলা করার পর লাশ উত্তোলন করতে আদেশ দেন। বাবার লাশ চট্টগ্রামে পোস্টমর্টেম করার অনুরোধ করছি। অপরাধীদের সুষ্ঠু বিচার চাই।

দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসিম জানান, আদালতের নির্দেশে হত্যা মামলা এফআইআর করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছে। বুধবার আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Scroll to Top