রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ঝুলছে অনুমোদনহীন শত শত ইন্টারনেট সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য ক্যাবল। মাকড়সার জালের মতো তারের এমন জঞ্জাল একদিকে পথচারীদের ঝুঁকিতে ফেলছে, অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে নগরীর সৌন্দর্য। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় রাজশাহী মহানগরীর সুনাম দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ ও বাসযোগ্য রাজশাহী মহানগরী বাতাসে ক্ষতিকারক ধূলিকণা কমানোয় বিশ্বের সেরা শহর। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং রাজশাহী মহানগরীর পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার ভূয়শী প্রশংসা করেছেন।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের হাত ধরে এই সুনাম অর্জন করেছে এ মহানগরী। তবে এই নগরীর সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট ক্যাবল অপারেটরদের তারের জঞ্জালে। নগরের বিভিন্ন সড়ক ও গলিপথে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ল্যাম্পপোস্টে জড়িয়ে থাকা তারের জঞ্জালের কারণে আর্থিং, শর্ট সার্কিট হয়ে প্রায়ই ঘটছে অগ্নিকাণ্ডসহ নানা দুর্ঘটনা। তারের জঞ্জাল কমাতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মহানগরবাসী।
নগরের বিভিন্ন সড়ক ও গলিপথে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ল্যাম্পপোস্টে জড়িয়ে থাকা তারের জঞ্জালের কারণে আর্থিং, শর্ট সার্কিট হয়ে প্রায়ই ঘটছে অগ্নিকাণ্ডসহ দুর্ঘটনা। তারের জঞ্জাল কমাতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মহানগরবাসী।
মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো ও ল্যাম্পপোস্টে তারের জঞ্জাল ঝুলছে। ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট ক্যাবল অপারেটরদের তারের ভারে খুঁটিগুলো বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। মহানগরীর সাহেব বাজার, জিরোপয়েন্ট, আরডিএ মার্কেটের সামনে, মনিচত্বর, রাণীবাজার, আলুপট্টি, নিউ মার্কেট, বর্ণালী মোড়, শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান চত্বর, লক্ষীপুর মোড়, তালাইমারি, কোর্ট চত্বর, কোর্ট স্টেশন এলাকাসহ সহ মহানগরীজুড়ে একইচিত্র। এসব তারের জঞ্জালে একদিকে নগরের সৌন্দর্যহানি হচ্ছে, অপরদিকে বিভিন্ন সময় ঘটছে অগ্নিকাণ্ড সহ বিভিন্ন দুর্ঘটনা। তারের জঞ্জাল কমাতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মহানগরবাসী। সচেতন নগরবাসী বলছেন, তারের জঞ্জাল মুক্ত আমাদের সুন্দর নগরী চাই।
অপরিকল্পিতভাবে এসব ক্যাবল বিদ্যুতের খুঁটিতে লাগানোর ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে এলাকাজুড়ে। অপরিকল্পিতভাবে ইন্টারনেট ক্যাবলের তার বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ঝুলে থাকার কারণে নগরীর সৌন্দর্য হারাচ্ছে। অপর দিকে ফুটপাত দিয়ে হাটার সময় আমরা অনেক ঝুঁকিতে থাকি। বিভিন্ন সময় অগ্নিকাণ্ডের খবর পাচ্ছি। আর পরিকল্পিত নগরীতে তারের জঞ্জাল কখনোই কাম্য নয় বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, নান্দনিক শহর গড়তে তারের জঞ্জাল সরানোর বিকল্প নেই। প্রয়োজনে তার মাটির নিচ দিয়ে নিতে হবে। তবে সেটি সময় সাপেক্ষ হওয়ায় বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো ও ল্যাম্পপোস্টে ঝুলে থাকা তারের জঞ্জাল সরাতে এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
মহানগরবাসী বলছেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় রাজশাহী দেশসেরা। আমার পরিচ্ছন্নতাই সবাই প্রশংসা করেন। এতে আমরা গর্বিত। কিন্তু যখন দেখি পরিচ্ছন্ন শহরের সৌন্দর্য্যহানি হচ্ছে তারের জঞ্জালের কারণে, তখন এটা আমাদের খারাপ লাগে। তারের জঞ্জাল ঝুঁকিপূর্ণও বটে। তারের জঞ্জালমুক্ত মহানগরী গড়তে এখন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। জনস্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা বেলাল উদ্দিন বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় দেশসেরা রাজশাহী। আমাদের পরিচ্ছন্নতার প্রশংসা সবাই করেন। এতে আমরা গর্বিত। কিন্তু যখন দেখি পরিচ্ছন্ন শহরের সৌন্দর্যহানি হচ্ছে তারের জঞ্জালের কারণে, তখন এটি আমাদের খারাপ লাগে। তারের জঞ্জাল ঝুঁকিপূর্ণও বটে। তারের জঞ্জালমুক্ত মহানগর গড়তে এখই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
নগরীর শিরোইল কলোনী এলাকার বাসিন্দা মাহতাব আলী বলেন, মাটির নিচে বিদ্যুতের তার নেওয়া হলে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কমে যাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষায় তার ছিঁড়ে পড়ার ভয়ও থাকবে না।
জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ বনি আহসান বলেন, ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট ক্যাবল অপারেটরদের তারের জঞ্জাল সরাতে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এরপরও তারের জঞ্জাল তারা সরাচ্ছে না। বিভিন্ন বিদ্যুতের খুঁটি ও ল্যাম্পপোস্টের সাথে অতিরিক্ত তার পেঁচিয়ে রাখছে ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট ক্যাবল অপারেটরা। এতে নগরায়ণের অনেক সমস্যা হচ্ছে।