ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগ (ডিপিএল) এর ম্যাচে আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকতের সঙ্গে তর্কে জড়ান তাওহীদ হৃদয়। গত ১২ এপ্রিল ম্যাচটি শেষে আম্পায়ারদের নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখান টাইগার ব্যাটার। এতে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পড়েন তিনি। ওই ঘটনায় তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আপিল করেছিল মোহামেডান। পরে তার শাস্তির মেয়াদ অনেকটা নাটকীয়ভাবে কমানো হয়। কিন্তু আম্পায়ার সৈকতের আপত্তিতে আবারও তার এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা বহাল করা হয়।
নিষেধাজ্ঞা এক ম্যাচ বাকি থাকলেও গত ২০ এপ্রিল অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে মাঠে নামেন হৃদয়। মূলত হৃদয়কে খেলাতে টুর্নামেন্টের মাঝপথে কোড অব কন্টাক্ট বদলে যায়। এরপর বিষয়টি নিয়ে জল বহুদূর গড়ায়। পরে এক ম্যাচের শাস্তি পুনঃবহাল হয় হৃদয়ের। তবে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা দেয়াতে ক্ষুব্ধ হন তামিম ইকবাল সহ কয়েকজন ক্রিকেটার।
তামিম ইকবালের নেতৃত্বে শুক্রবার বিকেলে তারা বিসিবি কার্যালয়ে বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে দেখা করে হৃদয়ের শাস্তি নিয়ে কথা বলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবির আরও দুই পরিচালক ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমূল আবেদীন ও আম্পায়ার্স এবং মিডিয়া কমিটির প্রধান ইফতেখার রহমান মিঠু। এরপরই হৃদয়ের শাস্তি এক বছর পিছিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিলো বিসিবি।
সন্ধ্যায় পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি জানিয়েছে, ‘গত ১৯ এপ্রিল আম্পায়ার্স কমিটির ইস্যুকৃত শাস্তি বাতিলের সেই সিদ্ধান্তের পর দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পুনঃবহাল করা হয়েছে। এর আগে শাস্তি প্রদানের সিদ্ধান্তটি টেকনিক্যাল গাইডলাইন অনুসারেই দেওয়া হয়েছিল, সেটি এখনও বৈধ এবং এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক পরবর্তী আদেশটি (নিষেধাজ্ঞা বাতিল) অবৈধ হয়ে গেছে।’
হৃদয়ের শাস্তি বহাল হলেও সেটি এক বছর পর কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করেছে বিসিবি। ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পরবর্তী আদেশ অকার্যকর হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির পর সভা হয়েছে, যেখানে বিষয়টি আবারও বিবেচনায় নিয়ে ম্যাচ নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টেকনিক্যাল কমিটি। যা কার্যকর হবে ১২ মাস পর (পরবর্তী ডিপিএলের শুরুতে)।’
এদিকে, হৃদয়ের বাড়তি এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল শনিবার গাজী গ্রুপের বিপক্ষে মোহামেডানের ম্যাচে। তবে নিষেধাজ্ঞা পেছানোয় এখন সেই ম্যাচে মোহামেডানের জার্সিতে নামতে হৃদয়ের সামনে আর কোনো বাধা নেই। তিনি তার এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার শাস্তি ভোগ করবেন পরবর্তী ডিপিএলের প্রথম ম্যাচে।
হৃদয়ের শাস্তি প্রত্যাহারের পর আবারও বহাল করা নিয়ে বিসিবিতে বৈঠকের পর তামিম বলেছিলেন, ‘প্রথমেই ২ ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে সমস্যা ছিল না। এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার পর দুই ম্যাচ খেলে আবার নিষিদ্ধ করা, এটা আসলে হাস্যকর ব্যাপার হয়ে গেছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে সে দুটি ম্যাচ খেলল। মানে ওর শাস্তি ততক্ষণে পেয়ে গেছে। ২ ম্যাচ খেলার পর কাল শুনলাম তাকে আবারও নিষিদ্ধ করেছে। এটা কোন নিয়মে, কীভাবে করেছে আমার জানা নেই।’