তাকবিরে তাশরিক: কী, কখন ও কেন পড়তে হয়

তাকবিরে তাশরিক: কী, কখন ও কেন পড়তে হয়

ধর্ম ডেস্ক : তাকবিরে তাশরিক একটি ওয়াজিব আমল। জিলহজের ৯ তারিখের ফজর থেকে ১৩ তারিখের আসর পর্যন্ত দিনগুলোকে বলা হয় তাশরিকের দিন। এ সময়কালজুড়ে প্রত্যেক মুসল্লিকে ফরজ নামাজের পর একবার তাকবিরে তাশরিক পড়া ওয়াজিব। এবছর ৬ জুন শুক্রবার ফজরের নামাজ থেকে ১০ জুন মঙ্গলবার আসরের নামাজ পর্যন্ত এই ওয়াজিব আমল পালন করতে হবে।

তাকবিরে তাশরিক: কী, কখন ও কেন পড়তে হয়তাকবিরে তাশরিক: কী, কখন ও কেন পড়তে হয়

তাকবিরে তাশরিক: কী, কখন ও কেন

তাকবিরে তাশরিকের মাধ্যমে আল্লাহর মহত্ব, বড়ত্ব ও একক সত্ত্বার ঘোষণা দেওয়া হয়। এটি ইসলামের অন্যতম প্রিয় ইবাদত। অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; সব প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। এটি ৯ জিলহজের ফজর থেকে ১৩ জিলহজের আসর পর্যন্ত পাঁচদিন পড়া হয়।

তাকবিরে তাশরিক হচ্ছে-

God শ্বর God শ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ (উচ্চারণ: আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ।)

তাকবিরে তাশরিক পড়ার নিয়ম

প্রত্যেক মুসল্লিকে ফরজ নামাজ শেষে, সালাম ফেরানোর পর সঙ্গে সঙ্গেই উচ্চস্বরে একবার তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। নারীরা নিচু স্বরে বলবেন। কোনো কথা বা নামাজ বিরোধী কাজের আগে এটি পড়ে ফেলতে হবে। মসজিদ ত্যাগ করার আগেই পড়া না হলে, ওয়াজিব ছুটে যাবে এবং গোনাহ হবে।

তাকবিরে তাশরিক সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল

১। নারীদের জন্য নিয়ম: নারীরা নিচু স্বরে তাকবিরে তাশরিক আদায় করবেন। (হাশিয়া তাহতাবী ১/৩৫৭)
২। ইমাম ভুলে গেলে: ইমাম ভুলে গেলে মুক্তাদিরা অপেক্ষা না করে নিজেরা তাকবির বলবেন। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২)
৩। নামাজ পরই পড়া জরুরি: সালাম ফেরানোর সঙ্গে সঙ্গে, কথা বলার আগেই তাকবিরে তাশরিক পড়তে হবে। (রদ্দুল মুহতার ২/১৮০)
৪। ভুলে গেলে: ভুলে গেলে মসজিদ ছাড়ার আগেই মনে পড়লে পড়ে ফেলতে হবে, পরে পড়া যাবে না। (মাবসুত সারাখসী ২/৪৫)
৫। কাজা নামাজে নিয়ম: তাশরিকের দিনগুলোর মধ্যে কোনো ফরজ নামাজ কাজা করলে তাকবির ওয়াজিব, তবে পরে আদায়ে নয়। (বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৬৪)
৬। ছুটে যাওয়া রাকাতে নিয়ম: জামায়াতে রাকাত ছুটলে, ইমামের সালামের পর নিজের নামাজ শেষ করে তাকবির পড়বেন। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২)

তাকবিরে তাশরিক ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব ইবাদত, যা জিলহজের নির্দিষ্ট পাঁচদিন পালন করতে হয়। মুসল্লিদের উচিত নির্ধারিত নিয়মে, যথাসময়ে এই তাকবির পড়া। এবছর ৬ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত প্রতিটি ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক পড়া ওয়াজিব।

ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত আরবিতে: সহজ ভাষায় বিশ্লেষণ

FAQs (তাকবিরে তাশরিক)

১. তাকবিরে তাশরিক কতদিন পড়তে হয়?
জিলহজের ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত মোট পাঁচদিন ফরজ নামাজের পর একবার পড়তে হয়।

২. নারীরা তাকবিরে তাশরিক কীভাবে পড়বেন?
নারীরা তাকবিরে তাশরিক নিচু স্বরে পড়বেন, উচ্চস্বরে নয়।

৩. যদি ভুলে তাকবিরে তাশরিক না পড়ে ফেলি?
মসজিদ ত্যাগ করার আগেই মনে পড়লে পড়তে হবে। বের হয়ে গেলে ওয়াজিব ছুটে যাবে।

৪. ইমাম ভুলে গেলে কী করবো?
ইমাম ভুলে গেলে মুক্তাদিরা নিজ দায়িত্বে তাকবির পড়বেন, অপেক্ষা করার দরকার নেই।

৫. কাজা নামাজে তাকবিরে তাশরিক বলতে হবে কি?
তাশরিকের দিনগুলোতে কাজা নামাজ আদায় করলে তাকবির বলতে হবে, তবে অন্যান্য দিনে নয়।

৬. জামায়াতে রাকাত ছুটে গেলে তাকবির কবে বলবো?
ইমামের সালামের পর নিজের নামাজ পূর্ণ করে তাকবির পড়তে হবে।

Scroll to Top