ঢাকা, ০৯ জুন – ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৭৫টি ওয়ার্ডে এবার এক লাখ ৬৬ হাজার ৭৫৪টি পশু কোরবানি হয়েছে। এসব কোরবানির পশু থেকে উৎপন্ন ৩১ হাজার ২২৬ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।
সোমবার (৯ জুন) রাজধানীর ওয়াসা ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কর্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, এ বছর ঈদুল আজহায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে মোট এক লাখ ৬৬ হাজার ৭৫৪টি পশু কোরবানি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দিনে এক লাখ ৩৩ হাজার ৩১৭টি, দ্বিতীয় দিনে ৩১ হাজার ৭৪৫টি এবং তৃতীয় দিনে এক হাজার ৬৯২টি পশু কোরবানি হয়েছে।
তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহার প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে থেকে শতভাগ কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। তৃতীয় দিনে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ৭৫টি ওয়ার্ড থেকে শতভাগ কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তৃতীয় দিন দুপুর ২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত মোট ৩১ হাজার ২২৬ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০ হাজার মেট্টিক টন। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বর্জ্য নির্ধারিত সময়ের আগেই অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে।
শাহজাহান মিয়া বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী ইজারা দেওয়া ৮টি পশুর হাটের মধ্যে ৮টিরই বাঁশের খুঁটি, ভাসমান ও উড়ন্ত ময়লা অপসারণ করা হয়েছে। হাটের সামগ্রিক বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে, আশা করা যায় দ্রততম সময়ের মধ্যে শেষ হবে।
তিনি বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে ১২ হাজার ৮৫৩ জন জনবল সম্পৃক্ত ছিল। বর্জ্য অপসারণে ছোট-বড় দুই হাজার ৭৯টি যানবাহন এবং ৩৪৪টি যান যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নগর ভবনে স্থাপিত কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে কোরবানির পশুর হাট ও কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ সরেজমিনে সচিত্র তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রতিটি হাটে আলাদা আলাদা নিয়ন্ত্রন কক্ষ স্থাপন করা হয়েছিল। এছাড়া প্রতিটি হাটে আলাদা আলাদা তদারকি কমিটি, অঞ্চলভিত্তিক আঞ্চলিক তদারকি কমিটি এবং কেন্দ্রীয়ভাবে সার্বিক তদারকি কমিটির মাধ্যমে সরেজমিনে মনিটরিং করা হয়। হাটে আইনশৃঙ্খলা তদারকির জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় এবং ৮টি হাটে ৪০০ জন আনসার ভিডিপির সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল।
প্রশাসক বলেন, কোরবানি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে নগরবাসীর মধ্যে প্রায় ৪৫ টন ব্লিচিং পাউডার, ২০৭ গ্যালন (প্রতি গ্যালনে ৫ লিটার) এবং এক লাখ ৪০ হাজার বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগ বিতরণ করা হয়।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ের আগেই কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করায় মাঠ পর্যায়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান শাহজাহান মিয়া। এছাড়া, কোরবানির বর্জ্য অপসারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে সহযোগিতা করায় নগরবাসীর প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ব্রিফিংয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
আইএ/ ০৯ জুন ২০২৫