বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টে বার্ষিক চড়াই মৌসুমে ড্রোন ব্যবহার করে আবর্জনা অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ক্লাইম্বার এবং গাইডদের সঙ্গে একটি ড্রোন টিম যোগ দিয়ে ভারী দায়িত্বের ড্রোন দিয়ে পর্বতের আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
শূন্য ক্যান, গ্যাস সিলিন্ডার, বোতল, প্লাস্টিক এবং ফেলে দেওয়া সরঞ্জাম মিলিয়ে এভারেস্ট প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারিয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ ডাম্পস্টার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
নেপালভিত্তিক এয়ারলিফট টেকনোলজি কোম্পানির রাজ বিক্রম মহার্জান জানান, একমাত্র বিকল্প ছিল হেলিকপ্টার বা মানুষবল। আর তার মাঝে কোনো বিকল্প ছিল না। তাই আমরা ভারী-লিফট ড্রোন ব্যবহার করে আবর্জনা অপসারণের ধারণা নিয়ে এলাম।
এই প্রকল্পের দুইটি ডিজেআই এফসি ৩০ হেভি-লিফটার ড্রোন এই মৌসুমে ৬ হাজার ৬৫ মিটার (১৯ হাজার ৯০০ ফুট) উচ্চতার ক্যাম্প-১ এ নিয়ে যাওয়া হয় এবং ৩০০ কেজি আবর্জনা নিচে নামানো হয়।
গত বছরে সফল পরীক্ষার পর কোম্পানি নিকটবর্তী মাউন্ট আনা ডাবলামে সিস্টেমটি ব্যবহার করে ৬৪১ কেজি আবর্জনা অপসারণ করেছে। খুম্বু পাসাং লাহমু গ্রামাঞ্চলের ভাইস চেয়ারম্যান তাশি লাহমু শের্পা বলেন, এটি পর্বতমালায় পরিবেশ পরিষ্কার ও নিরাপদ রাখার জন্য এক বিপ্লবী উদ্যোগ।
কর্মক্ষমতা ও নিরাপত্তায় ‘গেম চেঞ্জার’ সাগারমাথা পলিউশন কন্ট্রোল কমিটির প্রধান চেরিং শের্পা বলেন, ড্রোনগুলো আগের পদ্ধতির তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর, কম খরচে এবং নিরাপদ। মাত্র ১০ মিনিটে একটি ড্রোন সেই পরিমাণ আবর্জনা নিয়ে যেতে পারে, যা ১০ জন মানুষ ছয় ঘণ্টা সময় নিত।
প্রতি ড্রোনের খরচ প্রায় ২০ হাজার মার্কিন ডলার হলেও, চীনের হেডকোয়ার্টার্ড নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এই ড্রোনগুলো সরবরাহ করেছে, পরিষ্কার অভিযান ও ব্র্যান্ড প্রচারের জন্য। স্থানীয় কর্তৃপক্ষও আংশিক খরচ বহন করেছে।
ড্রোনগুলো শুধু আবর্জনা অপসারণে নয়, জীবনের জন্য অপরিহার্য সরঞ্জাম যেমন অক্সিজেন সিলিন্ডার, সিঁড়ি এবং দড়ি সরবরাহেও ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে খুম্বু আইসফল, এভারেস্টের সবচেয়ে বিপজ্জনক অঞ্চলের ক্রসিং সংখ্যা কমছে।
রেকর্ডধারী ক্লাইম্বার নিমা রিনজি শের্পা বলেন, ফিক্সিং টিমের মানুষরা খুবই খুশি। তারা নিজে গিয়ে সিঁড়ি, অক্সিজেন এবং দড়ি পৌঁছে দিতে পারে। এতে সময় ও শক্তি অনেক বাঁচে।
আগামী মাসে এয়ারলিফট টেকনোলজি ড্রোনগুলো বিশ্বের অষ্টম সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট মানাসলুতে নিয়ে যাবে।