ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক কি যুদ্ধ থামাতে পারবে, ইতিহাস কী বলছে

ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক কি যুদ্ধ থামাতে পারবে, ইতিহাস কী বলছে

এমনকি রোমান এবং চীনা সম্রাটেরা যদি তৃতীয় শতকে আলোচনায় বসতেন, তাতেও দুনিয়ার ভাগ্য বদলাত না। তখনকার সাম্রাজ্যগুলো একটি যুদ্ধের মাধ্যমে পুরো পৃথিবী জয় করতে পারত না; কিন্তু আজ রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র তা পারে। গত তিন বছরে দেশ দুটি এমন এক জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখান থেকে আর ফেরার পথ নেই। আর তাই বড় কোনো অগ্রগতি না হলেও আলাস্কার বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ।

এ ধরনের বৈঠক আসলে পারমাণবিক যুগের ফসল। এগুলোকে শুধু একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। আমরা বিপর্যয়ের কতটা কাছে কিংবা দূরে আছি—তারই ইঙ্গিত দেয় এ ধরনের বৈঠক।

যুক্তরাষ্ট্র এ বৈঠকে পশ্চিমা জোটের প্রতিনিধিত্ব করেছে। এমনকি কৌশলগত প্রশ্নে যুক্তরাজ্য বা ফ্রান্সের মতো পারমাণবিক শক্তিধর দেশও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। আর রাশিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে এশিয়া, আফ্রিকা আর লাতিন আমেরিকার ডজনখানেক দেশ। তারা পশ্চিমাদের আধিপত্যে বিরক্ত; কিন্তু নিজেরা একা সেই আধিপত্য ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে পারবে না। এই দেশগুলো জানে, স্থানীয় সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা আধিপত্যের অন্যায্য কাঠামোকে বদলাতে পারবে না।

তাহলে কি আলাস্কা থেকে নতুন কোনো বিশ্বব্যবস্থা জন্ম নেবে? সম্ভবত না। একটি স্থায়ী বিশ্বব্যবস্থার ধারণা ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে আসছে। কোনো শক্তিই এখন সেটি বজায় রাখার মতো ক্ষমতাধর নয়। তাই বিশ্ব রাজনীতি এগোচ্ছে আরও অনিশ্চয়তার দিকে।

এই বৈঠক থেকে তাৎক্ষণিক সমাধান আসবে না; বরং শুরু হবে দীর্ঘ ও কঠিন আলোচনার পথ। কিন্তু ইতিহাস আমাদের মনে করিয়ে দেয়—যখন পৃথিবীর একমাত্র অজেয় শক্তি দুটি মুখোমুখি হয়, তখন তাদের সরাসরি সংলাপ মানবজাতির ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য হয়ে ওঠে।

Scroll to Top