ওয়াশিংটন, ২১ ডিসেম্বর – সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের শাসন শুরু হয়েছিল সত্তরের দশকের শুরু থেকে। পিতা আসাদ আল-হাফিজের পর গত ২৪ বছর ধরে সিরিয়া শাসন করছিলেন বাশার আল-আসাদ। আর দীর্ঘদিনের এই শাসনের পতন ঘটানোর পেছনে ছিলেন হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। যিনি বর্তমানে আহমেদ আল-শারা নামে পরিচিত।
বিদ্রোহীদের মাত্র ১২ দিনের অগ্রাভিযানের মুখে বাশার আল-আসাদের অবিশ্বাস্য পরাজয় বিস্মিত করেছে আন্তর্জাতিক সব মহলকে। সরকারবিরোধী বিদ্রোহীরা রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নিলে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় উড়াল দেন।
২০১৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র জোলানিকে সন্ত্রাসী হিসাবে ঘোষণা করে। বিশেষ করে তার মিলিশিয়া দলকে ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে নিষিদ্ধ করেছিল এবং তার মাথার জন্য ১০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু ১১ বছরের মাথায় যুক্তরাষ্ট্র তার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করলো। গতকাল দামেস্কে সিরিয়ার নতুন শাসকদের সঙ্গে প্রথম সরাসরি আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারা। দলটিতে ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তা বার্বারা লিফ, প্রেসিডেন্টের হোস্টেজ বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি রজার কারস্টেনস এবং জেষ্ঠ্য উপদেষ্টা ড্যানিয়েল রুবিনস্টাইন।
পরে বৈঠকের বিষয়ে বিবৃতি দেন বার্বারা। তিনি বলেন তাহরির আল শামের প্রধান আহমেদ আল শারার সঙ্গে তাদের আলোচনা ভালো হয়েছে।
দেশটির কোন গোষ্ঠী যেন সিরিয়া ও বহির্বিশ্বের জন্য হুমকি না হয়ে উঠতে পারে এ বিষয়ে জোর দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। আল শারার মাথার ওপর ১ কোটি ডলারের যে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সেটি তুলে নেয়া হয়েছে বলেও জানান বার্বারা।
আসাদের পতনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আগেই ঘোষণা করেছেন, এইচটিএসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যোগাযোগ করেছে।
এইচটিএস একসময় সিরিয়ার আল-কায়েদা শাখার সঙ্গে জড়িত ছিল। তবে এখন গোষ্ঠীটি বলছে, তারা এখন নিজেদের বদলে ফেলেছে এবং সবাইকে নিয়ে কাজ করার মতো একটি ব্যবস্থা চালু করতে চায়। তাদের মূল লক্ষ্য এখন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।
আহমাদ আল-শারা জানিয়েছেন, তার দেশ এক দশকের বেশি সময় ধরে যুদ্ধে ক্লান্ত। বর্তমান এটি তার প্রতিবেশী বা পশ্চিমাদের জন্য হুমকি নয়।
সূত্র: যুগান্তর
আইএ/ ২২১ ডিসেম্বর ২০২৪