জুমবাংলা ডেস্ক : ভারত থেকে আলু আমদানি বন্ধ থাকলেও দেশীয় নতুন আলু উঠতে শুরু করায় বাজারে পণ্যটির সরবরাহ বেড়েছে। এতে করে সপ্তাহের ব্যবধানে দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে দেশীয় আলুর দাম কমেছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫টাকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আলুর দাম কমায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষজন। দেশীয় নতুন আলু পুরোপুরি বাজারে আসতে শুরু করলে দাম আরো কমে আসবে দাবি ব্যবসায়ীদের।
রবিবার সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতিটি দোকানেই দেশীয় নতুন আলু রোমানা ও ক্যারেজ জাতের আলু শোভা পাচ্ছে। তবে দুএকটি দোকানে পুরনো গুটি ও কাটিনাল জাতের আলু দেখা যাচ্ছে। তবে দাম একই রকম হওয়ায় ক্রেতারা নতুন আলু কিনছেন। নতুন জাতের রোমানা ও ক্যারেজ আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০টাকা কেজি দরে এছাড়া পুরানো গুটি ও কাটিনাল জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি দরে। এসব জাতের আলু পুর্বে ৬৫ থেকে ৭০টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।
হিলি বাজারে আলু কিনতে আসা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় আলুর দাম সবচেয়ে বেশি ছিল এই বছরে। আলুর দামের যে রেকর্ড সবকিছু ভেঙে দিয়ে এবারে যে দাম উঠে গিয়েছিল তা রেকর্ড করেছে। এক কেজি আলু কিনতে হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০টাকা দরে। এর চেয়ে ভারতীয় আলু কিছুটা কম ছিল তবুও ৬০টাকার নিচে ছিলনা দাম। আলু একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এমন কোন তরকারি নেই যে তাতে লাগেনা এমনকি ভর্তা ভাত খেতে হলেও আলুর প্রয়োজন কিন্তু সেই আলুর দাম বেড়ে ঊর্ধ্বমুখি হয়ে যায়। যার কারনে আলু কিনতে গিয়ে নিন্ম আয়ের মানুষদের খুব সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছিল। অবশেষে নতুন আলু উঠতে শুরু করায় আলুর দাম কমতে শুরু করেছে। এখন পুরানো ও নতুন আলু প্রায় একই দামে বিক্রি হচ্ছে যার কারনে আমরা সকলেই নতুন আলু কিনে খাচ্ছি। তবে এখনো যে দাম সেটিও আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে তাই আলুর দাম যেন পুর্বের মত ২০টাকার মধ্যে আসে সেই দাবি জানাচ্ছি।
আলু কিনতে আসা হায়দার আলী বলেন, সব রেকর্ড ভেঙে আলুর বাড়তি দামের কারণে খুব সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছিল আমাদের মত নিন্ম আয়ের মানুষদের। বাধ্য হয়ে কিছুদিন আলু ছাড়াই খেতে হচ্ছিল আবার খেলেও পরিমান কমাতে বাধ্য হতে হচ্ছিল। এখন নতুন আলু উঠার ফলে সেই অবস্থা থেকে কিছুটা স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। বর্তমানে ৫৫ থেকে ৬০টাকার মধ্যে আলু কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। যার কারনে এখন একটু হলেও আলু কিনতে পারছি আমরা চাই আলুর দামটা যেন আরো কমে তাতে করে নিম্ন আয়ের মানুষজন ভর্তা ভাত খেয়ে পড়ে চলতে পারবে।
হিলি বাজারের আলু বিক্রেতা মশিউর রহমান বলেন, দেশীয় আলুর মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় বাজারে পণ্যটির সরবরাহ কমে যাওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরেই আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখি হয়ে যায়। এমন অবস্থায় দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে ভারত থেকে আলু আমদানি শুরু হয়। কিন্তু বন্দরে আমদানিকৃত আলুর দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় আলু আমদানির পরেও বাজারে আলুর দাম খুব একটা কমেনি। আমরা যখন যে দামে কিনেছি সেই মোতাবেক আলু বিক্রি করেছিলাম। বাড়তি দামের কারনে মানুষজন আলু ক্রয় কমিয়ে দিয়েছিলো। ১ ডিসেম্বর থেকে ভারত থেকে আলু আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে এতে করে পণ্যটির সরবরাহ কমায় ও দেশীয় আলুর উপর চাপ বাড়ায় দাম কিছুটা বাড়তে শুরু করেছিল। বর্তমানে হিলিসহ আশে পাশের বিভিন্ন এলাকায় আগাম জাতের নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। এতে করে বাজারে আলুর সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে নতুন জাতের রোমানা ও ক্যারেজ আলু ৫৫ থেকে ৬০টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া পুরানো আলু ৫৫ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। পুরানো ও নতুন আলু একই রকম দাম হওয়ায় ক্রেতারা পুরানো আলু না কিনে নতুন আলু কিনছেন। আগামী কিছুদিনের মধ্যে পুরোদমে আলু উঠতে শুরু করবে এতে করে বাজারে আলুর সরবরাহ বাড়বে সেই সাথে দাম কমে আসবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবারে বীজসহ অন্যান্য উপকরনের দাম বৃদ্ধির কারনে আলু আবাদে খরচ বেশি হয়েছে কৃষকদের। যার কারনে আলুর দাম খুব একটা কমবে বলে আশা করা যায়না।