জালিয়াত সচিব’ নিয়াজ কানাডায় হাজার কোটি টাকা পাচার করেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে – DesheBideshe

জালিয়াত সচিব’ নিয়াজ কানাডায় হাজার কোটি টাকা পাচার করেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে – DesheBideshe

জালিয়াত সচিব’ নিয়াজ কানাডায় হাজার কোটি টাকা পাচার করেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে – DesheBideshe

এম এম নিয়াজ উদ্দিন। বিসিএস ৮৩ ব্যাচের একজন কর্মকর্তা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব পদ থেকে অবসরে যান। মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতিসহ নানা কেলেঙ্কারিতে আলোচিত তিনি। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে তিনি প্রথম আলোচনায় আসেন। তার সময়ে এই অধিদপ্তরের প্রায় ৪ হাজার নিয়োগে নজির বিহীন নিয়োগ বাণিজ্য হয়। কোটি কোটি টাকার লেনদেনে আলোচিত হন এম. নিয়াজ উদ্দিন। জানা যায়, অবৈধভাবে উপার্জিত এ সকল অর্থ তিনি কানাডায় পাচার করেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় বসলে আমলাদের মধ্যে আওয়ামী লীগার হওয়ার তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়। অভিযোগ থাকা সত্বেও এই প্রতিযোগিতায় সফল হন এম এম নিয়াজ উদ্দিন। তরতর করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ, লাভজনক পদ দখল করতে থাকেন তিনি। প্রথমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব হন। এরপর তিনি তার লক্ষ্যস্থল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হন। তারপরও তার লোভের শেষ নেই। চাকরির বয়স বাড়াতে এবার তিনি মুক্তিযোদ্ধার জাল সার্টিফিকেট জোগাড় করেন। সেসময় মুক্তিযোদ্ধা হলে দু বছর বেশী চাকরি করার সুযোগ ছিলো। কিন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন নিয়াজ উদ্দিনের জালিয়াতি ধরে ফেলেন। তদন্তে প্রমাণিত হয় তার সার্টিফিকেটটি ভুয়া। এসময় ‘বরখাস্ত’ হওয়া থেকে বাঁচতে নিজেই চাকরি থেকে ইস্তফা দেন।

আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার ইচ্ছা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগে ঢুকতে পারেননি নিয়াজ উদ্দিন। পরে তিনি যোগ দেন জাতীয় পার্টিতে। গত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসাবে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সে নির্বাচনে বিপুল ভোটে তিনি পরাজিত হন এবং তার জামানত বাজেয়াফত হয়। পরবর্তীতে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-১ ও গাজীপুর-৫ আসন থেকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে, নির্বাচনের কয়েকদিন আগে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। সম্প্রতি তিনি জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে খবরে প্রকাশ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, টরন্টোতে তার বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। তবে ঐ বাড়ি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিরাট ঘাপলা। কাগজ-পত্রে বাড়ির মালিক কানাডিয়ান বাংলাদেশি জনৈক আমিনুল হক। ট্যাক্স কর্তৃপক্ষ ও এনটি মানিলন্ডারিং কর্তৃপক্ষের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে আমিনুল হলফনামা দিয়ে বলেছেন, নিয়াজ উদ্দিনের অর্থে তিনি ঐ বাড়িটি কিনেছেন। আইনি জটিলতায় এখনও নিয়াজ উদ্দিন ঐ বাড়ির মালিক হতে পারেননি; তবে, কাগজ-পত্র ঠিকঠাক করার প্রক্রিয়া চলছে। আরও জানা যায়, নিয়াজ উদ্দিন ৭৫ হাজার কানাডিয়ান ডলারে ফার্মহাউস সহ ১ হেক্টর কৃষি জমি লিজ নিয়েছেন। এই জমিতে গ্রীষ্মকালে নানান ফসল হয়। আর বাংলাদেশ থেকেই এই কৃষি জমি তিনি তদারকি করছেন।

কানাডায় হাজার কোটি টাকা পাচার, জালিয়াতি ও সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত নিয়াজ উদ্দিন এখনো কিভাবে নির্বিঘ্নে জীবন যাপন করছেন এ নিয়ে অনেক প্রশ্ন! তার বিরুদ্ধে এতো এতো অভিযোগ থাকলেও কোথাও কোনো আলোচনায় নেই তিনি।



Scroll to Top