ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন: বড় পদ প্রত্যাশী অর্ধশতাধিক

National news

সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক: ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে পদ প্রত্যাশীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিজের গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে দলীয় প্রয়োজনে যেমন কাজ করছেন পাশাপাশি অনেকেই আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক নেতাদের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ রাখছেন। বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে প্রার্থীরা নেমেছেন লবিং-তদবিরে। কেউ কেউ এই নেতাদের বাসাবাড়ি ও অফিসেও ধরনা দিচ্ছেন। আগামী ৮ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে তাঁদের এই ব্যস্ততা।

দুই বছরের মেয়াদ শেষে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ২০২০ সালেই ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনার প্রাদুর্ভাবে সেটি সম্ভব হয়নি। এবার চার বছর পর ছাত্রলীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। ২০১৮ সালের মে মাসে সংগঠনের সর্বশেষ ২৯তম জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল। চার বছর পর সম্মেলনের কারণে এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেতে ইচ্ছুক প্রার্থীর সংখ্যা অন্যবারের চেয়ে অনেক বেশি।

তবে ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে কারা আসবেন- সেই আভাস এখনও মেলেনি। তবু ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আগামী নেতৃত্বকেন্দ্রিক আলোচনায় সরগরম। এতে বেশ কিছু প্রার্থীর নাম আলোচনায়।

সূত্র মতে, পদপ্রত্যাশী নেতাদের নামের পাশাপাশি আরও অনেক বিষয়ও আলোচনায় উঠে আসছে। বিশেষ করে কোন নেতার বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ, কার পারিবারিক ও রাজনৈতিক বৃত্তান্ত কী। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কোন নেতা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনে বেশি প্রভাব রাখবেন- এর ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করবে।

নেতৃত্বের দৌড়ে আছেন যাঁরা :এবারের জাতীয় সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থিতার দৌড়ে আলোচনায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক এজিএস সাদ্দাম হোসেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সোহান খান, কামাল খান, সৈয়দ আরিফ হোসেন, মাজহারুল ইসলাম শামীম, রাকিব হোসেন, তিলোত্তমা সিকদার, ফরিদা পারভীন, রাকিবুল হাসান ঐতিহ্য, আলিমুল হক ও রাকিবুল হাসান রাকিব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, বেনজির হোসেন নিশি, তাহসান আহম্মেদ রাসেল ও আব্দুল জব্বার রাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরদৌস আলম,গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক শেখ শামিম তূর্য, মুজাহিদুল ইসলাম সোহাগ, সাদ বিন কাদের চৌধুরী, সোহানুর রহমান সোহান, শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, নাজিম উদ্দিন ও বরিকুল ইসলাম বাঁধন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সজীব নাথ, উপ-বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স, খন্দকার হাবীব আহসান, উপ-তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এহসানুল হক পিয়াল, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক তুহিন রেজা, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ হীল বারী, উপ-সমাজসেবাবিষয়ক সম্পাদক হাসানুর রহমান হাসু, তানভীর হাসান সৈকত, ক্রীড়া সম্পাদক মো. আল আমীন সিদ্দিক সুজন, শরীফ বায়েজীদ ইবনে মাহমুদ কোতোয়াল, উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুর রশিদ রাফি, মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, উপ-নাট্য ও বিতর্কবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সুমন, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, আইনবিষয়ক সম্পাদক ফুয়াদ হাসান শাহাদাত, উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক সুজন শেখ ও শাহেদ খান, পরিবেশ সম্পাদক শামীম পারভেজ, উপ-পরিবেশ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ সোহাগ, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ইমরান জমাদ্দার, উপ-সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক রাকিব সিরাজী, উপ-প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক হায়দার মুহাম্মদ জিতু, কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদক রনি মুহাম্মদ, উপ-কর্মস্থানবিষয়ক সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়, সহ-সম্পাদক দিদারুল আলম ও আনফাল সরকার পমন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ ও মো. শাহজালাল।

এর বাইরে আরও অনেকেই প্রার্থী হিসেবে নিজেদের জানান দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ফলে নেতৃত্বপ্রত্যাশীদের নামের তালিকা আরও দীর্ঘ হবে। এ ছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া শুরু হলে প্রার্থীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

উল্লেখ্য,  ছাত্রলীগের সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলন হয় ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে। এর আড়াই মাসেরও বেশি সময় পর ৩১ জুলাই নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন সভাপতি ও গোলাম রাব্বানী সাধারণ সম্পাদক হন। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও নৈতিক স্খলনের কারণে ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর শোভন ও রাব্বানীকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে আল-নাহিয়ান খান জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাঁদের পূর্ণ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

Scroll to Top