চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা, দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টায় পুলিশ | চ্যানেল আই অনলাইন

চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা, দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টায় পুলিশ | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা এলিফ্যান্ট রোডে রাতের বেলায় ‘মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের’ সামনে গাড়ি আটকে দুই কম্পিউটার ব্যবসায়ীকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব নিয়ে এ হামলা করা হয়েছে। এদিকে গতকাল শনিবার দুপুরে মাল্টিপ্ল্যান মার্কেটের সামনে মানববন্ধন থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ব্যবসায়ীরা।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীদের কেউ ছিলেন মাস্ক পরা, কারো মাথা ছিল হেলমেটে ঢাকা। সিসিটিভির ক্যামেরার মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর ‘মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের’ সামনে গাড়ি আটকে এলিফ্যান্ট রোড কম্পিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ওয়াহেদুল হাসান এবং ইপিএস কম্পিউটার সিটির (মাল্টিপ্লান) যুগ্ম সদস্য সচিব এহতেসামুল হককে চাপাতি দিয়ে কোপায় একদল দুর্বৃত্ত ।

GOVT

পরে তাদের উদ্ধার করে পাশের পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাতে ও পায়ে মারাত্মক জখম নিয়ে এহতেসাম এখনো হাসপাতালে ভর্তি। আর হাতে জখম হওয়া ওয়াহেদুল হাসানকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনার একটি ১০-১২ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে চাপাতি দিয়ে কোপানোর নৃশংসতা ফুটে উঠেছে।

ভুক্তভোগী আহত ব্যবসায়ী ওয়াহেদুল হাসান জানান, হামলাকারীদের এলোপাতাড়ি কোপে গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়, লুকিং গ্লাস খুলে যায়। ২০/২২ জনের মতো ওরা ছিল। বেশ কয়েকজন হামলায় অংশ না নিয়ে দাঁড়িয়েছিল পকেটে হাত দিয়ে। হয়ত ওদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। সুযোগ পেলে গুলি করে দিত। আমি এক পর্যায়ে দরজা খোলার চেষ্টা করি। আমি লাথি দিয়ে একজনকে ফেলে দিই। এরপর দৌড়ে নেমে মাল্টিপ্ল্যানে ব্যবসায়ী অফিসে ঢুকে ৯৯৯-এ ফোন করে জানাই।

এ ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ী ওয়াহিদুল হাসান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর ধানমণ্ডির শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের লোকজন এহতেশামুল হক ও তার কাছে চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় মাল্টিপ্ল্যান দোকান মালিক সমিতির একজন সদস্য থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন। চাঁদা না দেওয়ায় আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।

দুই ব্যবসায়ী নেতার ওপর হামলাকারীদের বিচার চেয়ে শনিবার দুপুরে মার্কেট বন্ধ রেখে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেছেন এলিফ্যান্ট রোডের কম্পিউটার ব্যবসায়ীরা। তারা মার্কেটের সামনের রাস্তায় জড়ো হয়ে হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ আগস্টের পর মাল্টিপ্ল্যান কম্পিউটার সিটি মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নতুন গ্রুপের হাতে চলে যায়। তারাই মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতি দখল করে নেয়। এই গ্রুপ মোহাম্মদপুর এলাকার এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর আশীর্বাদপুষ্ট। তাদেরই আবার প্রতিপক্ষ ধানমণ্ডি কেন্দ্রিক একটি শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ। ধানমণ্ডির গ্রুপটিই এলিফ্যান্ট রোড ও নিউমার্কেট এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে। এরই জেরে এ নৃশংস হামলা।

হামলার ঘটনায় শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত নিউমার্কেট থানায় কোনো মামলা নথিভুক্ত হয়নি। গ্রেপ্তার হয়নি হামলাকারীদের কেউ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশের নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার তারিক লতিফ বলেন, দুই ব্যবসায়ীর ওপর মার্কেটের সামনে অতর্কিতভাবে হামলার ঘটনায় জড়িতদের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শনাক্তের চেষ্টা করছি।

তবে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসীন উদ্দীন বলেন, আমরা তদন্ত শুরু করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি। সম্ভাব্য অপরাধী, চাঁদাবাজদের নজরদারির আওতায় আনার চেষ্টা করছি।

ওসি বলেন, ‘হামলাকারী ১০-১২ জনের সবাইকে মাস্ক পরিহিত দেখা গেছে। আমরা বিষয়টা দেখছি, জড়িতদের নাম-পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছি। জড়িতরা যেই হোক ছাড় দেওয়া হবে না।’

Shoroter Joba

Scroll to Top