সম্ভাব্য ক্ষতি এবং ক্ষতির এলাকা
গবেষণায় বাংলাদেশের ওপর ঝড়ের জোয়ারসংক্রান্ত ঝুঁকি মূল্যায়ন করা হয়েছে। মূল্যায়নগুলো তিনটি স্তরে করা হয়েছে জাতীয় স্তরে, আঞ্চলিক স্তরে (গঙ্গা, মেঘনা অববাহিকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চল) এবং স্থানীয় স্তরে।
গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাবের ক্ষেত্রে তিনটি পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হয়। একটি হলো স্বাভাবিক, একটি মাঝারি এবং তৃতীয়টি তীব্র। বৈশ্বিক সমাজ ও অর্থনীতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য পরিবর্তন তুলে ধরতে অংশত আর্থসামাজিক পথনির্দেশ (এসএসপি) আইপিসিসির একটি মডেল। ২০২১ সালে এটি প্রকাশিত হয়। এই মডেলই ২১০০ সাল পর্যন্ত তিন ধরনের পরিস্থিতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাব ব্যাখ্যা করা হয়েছে এ গবেষণায়।
এই মডেল সামনে রেখে গবেষণায় দেখানো হয়েছে, সীমিত আকারেও যদি বিশ্লেষণ করা হয়, তবে শতাব্দীর শেষে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়ের সময় জোয়ারের উচ্চতা ৪ দশমিক ৯ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। যদি মাঝারি মাত্রার পরিবর্তন হয়, তবে এর উচ্চতা হতে পারে ৫ মিটার। আর যদি পরিবর্তনের গতিধারা তীব্র হয়, তবে জোয়ারের উচ্চতা বাড়তে পারে ৫ দশমিক ৪ মিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ঝড়ের তীব্রতা বৃদ্ধি—এই দুই পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়েই এই পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে।
অথচ শত বছরে দেশের উপকূলে দেখা দেওয়া ঘূর্ণিঝড়ের সময় জোয়ারের উচ্চতা প্রায় সাড়ে ৩ মিটার। সেই তুলনায় এই শতকের শেষে যদি সীমিত আকারের পরিবর্তনও হয় তবু জোয়ারের উচ্চতা প্রায় দেড় মিটার বেড়ে যেতে পারে।
যদি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি বাদও দেওয়া হয়, তাহলে শুধু ঝড়ের গতিধারার পরিবর্তনের ফলে জোয়ার বাড়বে যথাক্রমে শূন্য দশমিক ৬ মিটার এবং শূন্য দশমিক ৯ মিটার।
আঞ্চলিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে ঝড়ের জোয়ারের প্রভাব অঞ্চলভেদে ভিন্ন। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রামের উত্তর অংশ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।
সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হলো চট্টগ্রামের উত্তরাংশ, এরপর মেঘনা অঞ্চল এবং গঙ্গা অঞ্চল। চট্টগ্রামের দক্ষিণাংশ ঝুঁকির দিক থেকে চতুর্থ স্থানে।