গাজার চলমান গণহত্যা থামাতে বিশ্বকে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে – DesheBideshe

গাজার চলমান গণহত্যা থামাতে বিশ্বকে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে – DesheBideshe

গাজার চলমান গণহত্যা থামাতে বিশ্বকে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে – DesheBideshe

তেহরান, ২৫ আগস্ট – ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, গাজার চলমান গণহত্যা থামাতে বিশ্বকে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, এই মানবিক বিপর্যয় শুধু মুসলমানদের সমস্যা নয়, এটি সমগ্র মানবতার বিবেকের জন্য একটি পরীক্ষা। তাই ইতিহাস আমাদের এই দেরি আর ক্ষমা করবে না।

সোমবার সৌদি আরবের জেদ্দায় ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বিশেষ বৈঠকে আরাঘচি এ কথা বলেন। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় ইরানের অনুরোধে, যা তিনি ৬ আগস্ট ওআইসি মহাসচিবের কাছে পাঠিয়েছিলেন।

আরাঘচি বলেন, গাজার বিপর্যয় শুধু মুসলমানদের বিষয় নয়। এটি বৈশ্বিক বিবেকের পরীক্ষা। তাই ধর্ম বা ভৌগোলিক অবস্থান নির্বিশেষে সব দেশকে মানবতা, ন্যায়বিচার ও মর্যাদার পক্ষে দাঁড়াতে হবে। ইতিহাস আমাদের এই দেরি ক্ষমা করবে না। গাজা আর অপেক্ষা করতে পারে না, এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।

তিনি বলেন, গাজায় যা ঘটছে তা কোনো প্রচলিত যুদ্ধ নয়, বরং পরিকল্পিত গণবিধ্বংস। আবাসিক এলাকা নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে, হাসপাতালগুলো কবরস্থানে পরিণত হয়েছে, শিশুদের অনাহার-অর্ধাহারে ফেলে রাখা হয়েছে। এটি সম্মিলিত শাস্তি, আধিপত্যের নীতি এবং নিপীড়নের নগ্ন উদাহরণ, যা গণহত্যার সব বৈশিষ্ট্য বহন করছে।

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ইসরায়েল প্রকাশ্যেই গাজায় স্থায়ী সামরিক নিয়ন্ত্রণ, নতুন অবরোধ, বাফার জোন ও জোরপূর্বক উচ্ছেদের পরিকল্পনা করছে। আর এসবের আসল নাম হলো ‘জাতিগত নিধন।’

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন স্পষ্টভাবে বলে, অনাহার সৃষ্টি করা, নির্বিচারে বোমাবর্ষণ, ঘরবাড়ি ধ্বংস ও মানুষকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। এটি একটি জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যমূলক প্রয়াস, যার একটাই নাম- ‘গণহত্যা’।

আরাঘচি প্রশ্ন তোলেন, ইতিহাস একদিন জিজ্ঞেস করবে, গাজা যখন দমবন্ধ অবস্থায় ধুঁকছিল, তখন মুসলিম বিশ্ব কি এক কণ্ঠে কথা বলেছিল? নাকি আমরা অন্যদের অপেক্ষায় ছিলাম? তার মতে, কেবল নিন্দা জানিয়ে কোনো লাভ নেই, এখন বাস্তব পদক্ষেপ দরকার।

তিনি ওআইসি দেশগুলোকে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। সেগুলো হলো- রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আইনি সব উপায় কাজে লাগিয়ে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে জবাবদিহি নিশ্চিত করা। ফিলিস্তিনিদের হত্যাকারীদের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা ও ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়া দেশগুলোকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করা।

আরাঘচি বলেন, গাজা শুধু কষ্টের প্রতীক নয়, এটি প্রতিরোধের প্রতীকও। মানব মর্যাদা বোমায় পুড়ে ছাই হয়ে যেতে পারে না। গাজার মানুষ আমাদের দৃঢ় সমর্থনের অপেক্ষায় আছে।

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিক্ষা দিয়েছেন, মুসলিম উম্মাহ একটি দেহের মতো। আজ সেই দেহ গাজায় রক্তাক্ত। নীরব থাকা মানে নিজেদেরই আঘাত করা। সাহসী পদক্ষেপই এই ক্ষত সারাতে পারে।

সূত্র: জাগো নিউজ
এনএন/ ২৫ আগস্ট ২০২৫



Scroll to Top