জেরুজালেম, ১১ আগস্ট – ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় উড়োজাহাজ থেকে ফেলা ত্রাণের প্যালেট মাথায় পড়ে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই উপত্যকার বৃহত্তম শহর গাজা সিটি দখলে ইসরায়েলের পরিকল্পনা ঘিরে যখন আন্তর্জাতিক সমালোচনা বাড়ছে, তখনই এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলো।
আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নিহতের নাম মুহান্নাদ জাকারিয়া ঈদ। শনিবার (৯ আগস্ট) কেন্দ্রীয় গাজার তথাকথিত নেতজারিম করিডোরের কাছে উড়োজাহাজ থেকে ত্রাণ ফেলার সময় একটি প্যালেট তার ওপর পড়ে।
আল জাজিরা যাচাইকৃত ভিডিওতে দেখা গেছে, জাকারিয়ার নিথর দেহের চারপাশে কয়েকজন মানুষ জড়ো হয়েছেন। কেউ কেউ তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। অন্য আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, জাকারিয়া ঈদের ভাই তাকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছেন ও পরবর্তী সময়ে তার বাবা নুসেইরাতের আল-আওদা হাসপাতালে ছেলের জন্য কাঁদছেন।
জাকারিয়ার ভাই রয়টার্সকে বলেন, দুর্ভিক্ষ আর কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও আমার ভাই প্লেন থেকে সমুদ্রে ফেলা সহায়তা নিতে গিয়েছিল। হঠাৎ করে একটি বাক্স সরাসরি তার ওপর পড়ে, আর সে শহীদ হয়।
তিনি আরও বলেন, যেসব দেশ ত্রাণ দিচ্ছে তারা সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে দিতে পারে না। তারা এগুলো প্লেন থেকে ফেলে আমাদের শিশুদের হত্যা করছে। আল-জায়দায় একটি শিশু মারা গিয়েছিল, এবার এখানে। কেউ আমাদের জন্য অনুভব করে না, আমাদের জন্য আল্লাহই পর্যাপ্ত।
জাতিসংঘ এরই মধ্যে বহুবার সতর্ক করেছে যে উড়োজাহাজ থেকে এভাবে ত্রাণ ফেলা (এয়ারড্রপ) বিপজ্জনক, অকার্যকর ও ব্যয়বহুল। সংস্থাটি ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছে যে তারা যেন স্থলপথে অব্যাহতভাবে মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেয়।
গাজা সরকারের গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর থেকে মাথায় ত্রাণ পড়ে অন্তত ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১২৪ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে, শনিবার (৯ আগস্ট) গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় চিকিৎসা সূত্র। নিহতদের মধ্যে সহায়তার জন্য অপেক্ষমাণ অসংখ্য মানুষও রয়েছে।
রোববার (১০ আগস্ট) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছেন, যাদের মধ্যে দুজন শিশু। এ নিয়ে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অপুষ্টি ও অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৭ এ, যার মধ্যে ১০০ শিশু।
সূত্র: জাগো নিউজ
এনএন/ ১১ আগস্ট ২০২৫