জেরুজালেম, ২৬ আগস্ট – গাজায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর টানা হামলায় একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮৬ জন ফিলিস্তিনি। রোববার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আহত হয়েছেন আরও ৪৯২ জন। সোমবার রাতের দিকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৫৮ জন ইসরায়েলি বাহিনীর নিক্ষিপ্ত গোলায় এবং বাকি ২৮ জন খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সেনাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে মারা গেছেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সোমবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে ৮৬ জনের মরদেহ ও ৪৯২ জন আহতকে আনা হয়েছে। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা রয়েছেন, কিন্তু পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও জনবল না থাকায় উদ্ধার সম্ভব হচ্ছে না।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, সোমবার পর্যন্ত গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৭৪৪ জনে এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯ জন ফিলিস্তিনি।
এদিকে গত ১৯ জুন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাস দুই মাসের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও ১৮ মার্চ সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ওই সময় থেকে প্রায় পাঁচ মাসে নিহত হয়েছেন অন্তত ১০ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৪৬ হাজার ২১৮ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষ দিক থেকে ত্রাণ ও খাদ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া সাধারণ মানুষদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। ২৭ মে প্রথমবারের মতো গাজায় ত্রাণ নিতে যাওয়া মানুষের ওপর গুলি চালানো হয়। এরপর থেকে নিয়মিতই এমন ঘটনা ঘটছে। এ সময়ের মধ্যে শুধু ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ২ হাজার ১২৩ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১৫ হাজার ৬১৫ জনের বেশি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায়। সেই হামলায় অন্তত ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস। এর জবাবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। টানা ১৫ মাসের বেশি সময় যুদ্ধ চালানোর পরও ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসকে দুর্বল না করা এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহল একাধিকবার গাজায় হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে। এমনকি আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, হামাসকে অকার্যকর না করা এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এনএন/ ২৬ আগস্ট ২০২৫