গণঅভ্যুত্থানকে ‘কালো শক্তির আন্দোলন’ বলা কে এই ফজলুর রহমান? | চ্যানেল আই অনলাইন

গণঅভ্যুত্থানকে ‘কালো শক্তির আন্দোলন’ বলা কে এই ফজলুর রহমান? | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

রাজধানীতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানকে তিনি ‘কালো শক্তির আন্দোলন’ আখ্যায়িত করায় আন্দোলনকারীরা তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রকাশ করে।

সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়সংলগ্ন তার বাসার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা স্লোগান দেন এবং প্রতীকীভাবে গ্রেপ্তারের অভিনয় করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্র বলেন, ‘বিএনপির ফজলুর রহমান আমাদের বিপ্লবীদের রাজাকারের বাচ্চা বলেছেন, কালো শক্তি বলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, আমরা অভিনয় করছি। আজ তাকেও প্রতীকীভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’ এ সময় ঘটনাস্থলে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ক্রমাগত বিতর্কিত ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে ফজলুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। চিঠিতে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান নিয়ে তিনি ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন। শহীদদের নিয়ে তার বক্তব্য গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থি এবং জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। দলীয় সুনাম ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে তাকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে বিএনপির সাড়ে চার শতাধিক নেতাকর্মীসহ প্রায় দেড় হাজার মানুষ শহীদ হন এবং ত্রিশ হাজারেরও বেশি মানুষ গুরুতর আহত হন। এই আন্দোলনের বীরোচিত ভূমিকাকে তিনি প্রতিনিয়ত অবমাননা করছেন।

কে এই ফজলুর রহমান
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফজলুর রহমান একটি আলোচিত নাম। তিনি বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি। ছাত্রজীবনে রাজনীতি শুরু করে তিনি ধীরে ধীরে জাতীয় পর্যায়ে উঠে আসেন।

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার করনসি গ্রামে জন্ম নেওয়া ফজলুর রহমান কৃষক পরিবারে বেড়ে ওঠেন। ছাত্রজীবনে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কিশোরগঞ্জে মুজিব বাহিনীর প্রধান ছিলেন তিনি।

স্বাধীনতার পর ১৯৮৬ সালে কিশোরগঞ্জ-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে লড়েন।

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হয়ে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও পরাজিত হন। তিনি এ সময় ওই দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

পরবর্তীতে চারদলীয় জোট সরকারের শেষ দিকে বিএনপিতে যোগ দেন। এরপর থেকে তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি এবং খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৮ সালের নবম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও জয় পাননি।

Scroll to Top