খিলক্ষেতে অস্থায়ী মণ্ডপ অপসারণ নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় – DesheBideshe

খিলক্ষেতে অস্থায়ী মণ্ডপ অপসারণ নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় – DesheBideshe


খিলক্ষেতে অস্থায়ী মণ্ডপ অপসারণ নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় – DesheBideshe

ঢাকা, ২৭ জুন – ঢাকার খিলক্ষেত এলাকার অস্থায়ী মণ্ডপ অপসারণের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো পরিস্থিতিতেই সরকারি জমি দখল করে কোনো ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ করা অনুমোদিত নয়।

শুক্রবার (২৭ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় একটি দুর্গা মন্দির ধ্বংসের অভিযোগে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। তবে প্রকৃত ঘটনা হলো, গত বছর দুর্গাপূজার সময় পূর্বানুমতি ছাড়াই স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি জমিতে অস্থায়ী পূজামণ্ডপ স্থাপন করেছিল। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ শর্তে অনুমতি দেয় যে পূজা উদযাপন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আয়োজকরা অস্থায়ী মণ্ডপটি সরিয়ে ফেলবেন।

তবে দুঃখের বিষয় হলো, ২০২৪ সালের অক্টোবরে পূজা শেষ হওয়ার পর আয়োজকরা পারস্পরিক শর্ত লঙ্ঘন করে অস্থায়ী মণ্ডপটি সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তারা সেখানে একটি ‘মহাকালী’ (কালী মূর্তি) স্থাপন করে। বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরও দুর্ভাগ্যবশত তারা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে উপেক্ষা করে মণ্ডপটিকে স্থায়ী করার উদ্যোগ নেয়।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, মণ্ডপের আয়োজকদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ এলাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন রেললাইনের উভয় পাশে অবৈধভাবে নির্মিত শত শত দোকান এবং রাজনৈতিক দলের অফিসসহ সব অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের জন্য একটি পাবলিক বিজ্ঞপ্তি জারি করে। মূলত বিদ্যমান রেললাইনের পূর্ব দিক থেকে ২০০ ফুট দূরে কেবল বাংলাদেশ রেলওয়ের জমি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ সেকশন ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের আওতায় আরও দুটি রেল ট্র্যাক নির্মাণ করা হচ্ছে এবং এ প্রকল্পের আওতায় নতুন লাইন সম্পন্ন করার জন্য এ জমির খুব প্রয়োজন ছিল। বিগত মাসগুলোতে অবৈধ ভূমি দখলকারীদের বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হলেও তা উপেক্ষা করা হয়। গত ২৪ ও ২৫ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ে অবশেষে সবাইকে সব অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেয়, যার মধ্যে পূজা আয়োজকদের অস্থায়ীভাবে নির্মিত মণ্ডপটি অপসারণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।

অবশেষে ২৬ জুন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে খিলক্ষেত এলাকার রেল ট্র্যাক বরাবর সব অননুমোদিত স্থাপনা শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ করে। উচ্ছেদপ্রক্রিয়া চলাকালীন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে যথাযথ শ্রদ্ধার সঙ্গে অস্থায়ী মণ্ডপের প্রতিমা নিকটবর্তী বালু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। সরকারি জমি পুনরুদ্ধারের জন্য অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণ একটি নিয়মিত এবং আইনসম্মত প্রশাসনিক কার্যক্রম। যদিও দেশের আইন অনুসারে নির্মিত কোনো ধর্মীয় স্থাপনার সঙ্গে বৈষম্য না করে সব উপাসনালয়ের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করে। তবু কোনো পরিস্থিতিতেই সরকারি জমি দখল করে কোনো ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ করা অনুমোদিত নয়। অস্থায়ী মণ্ডপের আয়োজকরা তাদের নিজস্ব অঙ্গীকার লঙ্ঘন করে রেল কর্তৃপক্ষের আস্থা এবং সদিচ্ছাকে স্পষ্টতই কাজে লাগিয়েছেন।

আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে উপাসনালয়ের সুরক্ষা। বাংলাদেশকে তার সমন্বিত ঐতিহ্য বজায় রাখতে কখনো বাধা দেয়নি যেখানে প্রতিটি নাগরিক তার বিশ্বাস বা বিশ্বাস নির্বিশেষে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং উন্মুক্ত সমাজে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে। বাংলাদেশ সবাইকে তথ্য ও বাস্তবতা উপেক্ষা করে কোনো বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

সূত্র: আরটিভি নিউজ
আইএ/ ২৭ জুন ২০২৫



Scroll to Top