<![CDATA[
সুপেয় পানির সংকটে খাল-বিলের লবণাক্ত পানি পান করে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন উপকূলের কয়েক লাখ মানুষ। গভীর নলকূপ স্থাপন না হওয়া এবং মিঠাপানির উৎস না থাকায় লবণপানির ওপর নির্ভর করতে হয় তাদের। লবণপানি পানের ফলে পেটের পীড়া ও ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগে ভুগতে হচ্ছে উপকূলবাসীকে।
এদিকে লবণাক্ত এলাকার মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে নানা পরিকল্পনার কথা জানান জনস্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, নদী ও খালের লবণাক্ত পানি ব্যবহার করে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিচ্ছেন নাজমা বেগম নামের এক নারী। কথা হয় তার সঙ্গে। শুধু নাজমা বেগম একা নন, মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহরবুনিয়া ইউনিয়নের ঘোষিয়াখালী গ্রামের মানিক নদীর পাশে সব পরিবারেই একই চিত্র। তিন দিকে নদীবেষ্টিত এবং খালের লবণাক্ত পানি মোরেলগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বাধ্য হয়েই ব্যবহার করতে হয়। সেখানকার ভূগর্ভস্থ পানিতে লবণের পরিমাণ বেশি থাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন হয় না। নেই যথেষ্ট মিঠাপানির পুকুরও। প্রতিনিয়ত এই পানি ব্যবহার করে পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: সুপেয় পানির দাবিতে সড়কে খালি কলস রেখে প্রতিবাদ
বাগেরহাটের শরণখোলা, মেরেলগঞ্জ, মোংলা, রামপাল ও সদরের ৫ উপজেলার ৪ লাখ মানুষ সুপেয় পানির সংকটে ভুগছে।
বহরবুনিয়া ইউনিয়নের ঘষিয়াখালী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পলাশ বলেন, সবচেয়ে বেশি লবণাক্ত পানি পান করতে হয় বহরবুনিয়া ,পঞ্চকরণ ও জিউধরা ইউনিয়নের মানুষের। পানির কষ্ট লাঘবে সুপেয় পানি সংরক্ষণের জন্য বেশি বেশি পুকুর খনন ও পানির ট্যাংকি স্থাপনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।
ঘষিয়াখালী গ্রামের জাহিদুর রহমানের নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের এলাকার চার পাশের নদী ও খালে লবণপানি। লবণপানি ব্যবহারের ফলে আমাদের নানা ধরনের রোগব্যাধি হচ্ছে। কয়েকটি গ্রামের মধ্যে মাত্র একটি মিঠাপানির পুকুর। সবাই মিলে আমরা এই পুকুরের পানি পান করি।
আরও পড়ুন: উপকূলে পানির জন্য হাহাকার
তোরাব মেমোরিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সোলায়মান হাওলাদার বলেন, লবণপানি-অধ্যুষিত বহরবুনিয়া ইউনিয়নের ঘষিয়াখালী, শনিরজোড়, ঢালিপাড়া, ডেনাতলা, উত্তর ফুলহাতা, কালিকাবাড়ী, জিয়ালবাড়িসহ ১০টি গ্রামের মানুষ একটি পুকুরের পানি পান ও রান্নার কাজে ব্যবহার করেন। এ ছাড়া পুকুরের আশপাশের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ওই পুকুরের পানি ব্যবহার করে আসছে, তা যথেষ্ট নয়। এই অবস্থায় ওই এলাকায় তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সুপেয় পানি ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
বাগেরহাট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত মল্লিক বলেন, যেসব এলাকায় গভীর নলকূপ অকার্যকর সেসব এলাকায় সুপেয় পনির ব্যবস্থা করেছি। এ ছাড়া লবণাক্ত এলাকার মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে নানা পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
]]>