পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বিশাল ত্যাগ ও কৃতজ্ঞতার উপলক্ষ। এই দিনে কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের এক মহান সুযোগ আসে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ও সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য। কোরবানির সময় পড়া হয় কিছু নির্দিষ্ট দোয়া, যা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের শিখিয়েছেন। এই লেখায় আমরা জানব কোরবানির পশু জবাইয়ের দোয়া ও তার মাহাত্ম্য, সহীহ সূত্রে প্রমাণিত দোয়া, এবং এই ইবাদতের পূর্বপ্রস্তুতির দিকগুলো।
কোরবানির পশু জবাইয়ের দোয়া ও তাৎপর্য
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরবানির সময় যে দোয়াটি পড়তেন, তা হলো:
ওহ God শ্বর, এটি আপনার এবং আপনার কাছ থেকে, আপনি এটি আমার কাছ থেকে গ্রহণ করেন
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা হাজিহি মিনকা ওয়ালাকা, তাকাব্বালহা মিন্নি।
অর্থ: হে আল্লাহ! এই পশুটি আপনার পক্ষ থেকে এবং আপনারই জন্য। আপনি এটি আমার পক্ষ থেকে কবুল করে নিন।
এই দোয়াটি সহীহ মুসলিম (হাদিস নম্বর: ১৯৬৬) থেকে প্রমাণিত। এর মাধ্যমে একজন মুসলমান তার কৃতকর্ম আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার মনোভাব প্রকাশ করে।
কোরবানি করার সময় এই দোয়া পড়ার পাশাপাশি আরও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দোয়া রয়েছে—
Of শ্বরের নামে God শ্বর বৃহত্তর
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি, আল্লাহু আকবার।
অর্থ: আল্লাহর নামে, আল্লাহ সর্বশক্তিমান।


কোরবানির আগে পড়া উত্তম দোয়া ও প্রস্তুতির গুরুত্ব
কোরবানির আগে পশু কেনার পর আলেমগণ বিশেষ দোয়া পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন:
ওহ God শ্বর, এটি আপনার এবং আপনার কাছ থেকে, আপনি এটি আমার কাছ থেকে গ্রহণ করেন
এটি মূলত পশুটিকে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার ঘোষণা। এভাবে নিজের অন্তরকে আল্লাহমুখী রাখা যায়, যা ইবাদতের প্রকৃত উদ্দেশ্য।
তাছাড়া কোরবানির প্রস্তুতিতে অন্তর্ভুক্ত—পশু কেনার জন্য অর্থ জোগাড়, ভালো ও সুস্থ পশু নির্বাচন, জবাইয়ের জায়গা নির্ধারণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা, গোশত বিতরণের পরিকল্পনা। এসব কাজ করতে গিয়ে যদি একান্তভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের নিয়ত রাখা হয়, তবে এগুলোকেও ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হবে ইনশাআল্লাহ।
কোরবানি সংক্রান্ত হাদিস ও ফিকহি দিক
কোরবানির শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে হাদিস
- নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহর নিকট সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো নহরের দিন (কোরবানির প্রথম দিন), এরপরের দিন।” — সুনানে আবু দাউদ (১৭৬৫)
- রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরবানির জন্য পশু জবাই করার সময় নিজ হাতে দোয়া পড়তেন এবং সাহাবীদের তা অনুসরণ করতে বলতেন।
কোরবানির শর্তাবলি
- কোরবানির পশু হতে হবে নির্দোষ ও নির্দিষ্ট বয়সসম্পন্ন।
- জবাইকারীকে কিবলার দিকে মুখ করে পশু জবাই করতে হবে।
- বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার পড়ে জবাই করা জরুরি।
- জবাই করার পরপরই গোশত তিন ভাগে ভাগ করে বিতরণ করা সুন্নত—পরিবার, আত্মীয়, দরিদ্র।
আমরা কীভাবে প্রস্তুতি নিতে পারি?
কোরবানির জন্য আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। পশুর খোঁজ করা, সুস্থতা যাচাই করা, দামের তুলনা করা ইত্যাদি জরুরি পদক্ষেপ। এর পাশাপাশি, পরিবার ও প্রতিবেশীদের সাথে আলোচনা করে কোরবানির পরিকল্পনা করলে তা আরও ফলপ্রসূ হয়।
FAQS
কোরবানির পশু জবাইয়ের সময় কোন দোয়া পড়তে হয়?
পড়তে হয় “বিসমিল্লাহি, আল্লাহু আকবার” এবং “اللَّهُمَّ هٰذِهِ مِنْكَ وَلَكَ، تَقَبَّلْهَا مِنِّي”।
পশু কেনার পর দোয়া পড়া কেন গুরুত্বপূর্ণ?
এটি ইবাদতের প্রস্তুতি ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিয়তের প্রকাশ।
কোরবানির আগে কী কী প্রস্তুতি দরকার?
অর্থ সংগ্রহ, পশু নির্বাচনে সতর্কতা, জবাইয়ের জায়গা নির্ধারণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি।
কোন হাদিসে কোরবানির গুরুত্ব বলা হয়েছে?
সুনানে আবু দাউদ (১৭৬৫), সহীহ মুসলিম (১৯৬৬) ইত্যাদি হাদিস গ্রন্থে কোরবানির গুরুত্ব এসেছে।
জবাই করার সময় কিবলার দিকে মুখ করা জরুরি কি?
হ্যাঁ, এটি সুন্নত এবং অধিক সওয়াবের জন্য অনুসরণীয়।
পশু জবাইয়ে কি শুধুমাত্র পুরুষরাই অংশ নিতে পারেন?
নারীরাও অংশ নিতে পারেন, তবে শরীয়তের নিয়ম মেনে।