চোখে নতুন স্বপ্ন, বুকভরা আশা, অন্তপ্রাণ অভিনয় প্রতিভা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার চাকচিক্য ছেড়ে ঢাকাই সিনেমায় নিয়মিত হতে শুরু করেছিলেন তাসকিন রহমান। ২০১৬ সালে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমায় নীল চোখে ঠাণ্ডা মেজাজের ভিলেন হিসেবে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিলেন তিনি। পরে ‘যদি একদিন’, ‘শান’, ‘মিশন এক্সট্রিম’সহ বেশ কয়েকটি সিনেমা দিয়ে নজর কেড়েছিলেন। কিন্তু গত চার বছর হলো লাপাত্তা এই অভিনেতা!
জানা যায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তাসকিন রহমান অস্ট্রেলিয়া ফিরে গেছেন। এরপর থেকে সেখানে জীবনযাপন করছেন। আপাতত তাসকিনের দেশে ফিরে আবার অভিনয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছেন তার বড় ভাই নির্মাতা অংশু।

তানিম রহমান অংশু বলেন, তাসকিন অস্ট্রেলিয়ার সিটিজেন। ওখানে সে নানাভাবে অ্যাকটিভ ছিল। সে অভিনয়ের এতোটাই প্যাশনেট ছিল যে, সব ছেড়ে অভিনয়ের নেশায় বাংলাদেশে আসে। অভিনয় পাগল থাকার কারণে নিজের টেককেয়ার করতে পারেনি। এরমধ্যে সে কিছুটা রাফ লাইফ লিড করেছে। বিশেষ করে ঘুমানো নিয়ে অনিয়ম করেছে দীর্ঘদিন; সঙ্গে মাথায় অনেক প্রেসার নিয়েছে। পরে জেনেছি, এতে তার ব্রেইনের অফটিকাল নার্ভ ড্যামেজ হয়েছে। এ কারণে সে চিকিৎসা নিতে আবার অস্ট্রেলিয়া ফিরে যায়। এখনও তার চিকিৎসা চলছে। লম্বা সময় চলবে।
”তাসকিনের যেহেতু মস্তিষ্কে সার্জারি হয়েছে, এখন তার স্ট্রেসফুল কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে এবং সে সবকিছু থেকে দূরে আছে। ওর যে সার্জারি হয়েছে সেটা মস্তিষ্ক এবং চোখের সঙ্গে কানেক্টেড। তাই সময় লাগবে। অস্ট্রেলিয়াতে ওর সাথে ওর ওয়াইফও আছে। সে তাসকিনকে টেককেয়ার করছে। সে অস্ট্রেলিয়া শান্তভাবে লাইফ লিড করছে। আমরা ফ্যামিলি থেকেও বলেছি এখন আসার দরকার নেই। সম্পূর্ণ সুস্থ হও।”
তানিম রহমান অংশু এবং তাসকিন রহমান সহোদর। এই পরিচয় অনেকেই হয়তো জানেন না। আলাপকালে অংশু বলেন, আমরা আপন দুইভাই হলেও এই পরিচয়টা বেশি শো করিনি। ওর নিক নেম হচ্ছে অঞ্জন। ছোটবেলা থেকে সে অভিনয় করতো। বিটিভির পপুলার চাইল্ড আর্টিস্ট ছিল। হুমায়ূন ফরিদী স্যার, জাহিদ হাসান ভাইদের ছোটবেলার চরিত্রগুলো করেছে। সে ‘হৃদয় আমার নাম’ নামে একটি সিনেমা করেছিল, যেখানে আমিন খানের ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করেছিল। পরে ফিল্মের জন্য তখন আমাদের ফ্যামিলি আর তাসনিককে অনুমতি দেয়নি।
”এরপর তাসকিন উচ্চশিক্ষার জন্য ২০০২-এ অস্ট্রেলিয়া চলে যায়। সেখানে ক্যারিয়ার তৈরি করে। কিন্তু ওর ভিতরে অভিনয়ের নেশাটা সবসময় ছিল। অস্ট্রেলিয়া থাকলেও ওর সঙ্গে সবসময় কাজ নিয়ে আলাপ হতো। আমার একটা নাটক দেখে সে বলেছিল, ভাইয়া আমি আবার অভিনয় করতে চাই। একেবারে নাছোড়বান্দা ছিল সে। দেশে এসে দুটি ফিকশনে কাজ করেছিল। তাসকিন ছিল একেবারে ক্যামেরা ফ্রেন্ডলি।”
তানিম রহমান অংশু বলেন, তাসকিনের আগ্রহ দেখে পরে সিদ্ধান্ত নেই, ‘আদি’ সিনেমায় ওকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রাখবো। ছবিটা রিলিজ হয়নি বলে কেউ বুঝতে পারেনি। ‘আদি’র ট্রেলারে ওকে দেখে সে ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এ সুযোগ পায়। এরপর তাসকিন সবার কাছে পরিচিতি পায়।