এয়ার কন্ডিশনার (এসি) এখন কমবেশি সবার ঘরেই আছে। এবং এটি প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক পণ্য। গরমে স্বস্তি পেতে এসি ছাড়া চলে না। এককথায় আমাদের নিত্যসঙ্গী বলা যায়। ঘরের জন্য একেবারে জরুরি। বর্ষায় ঘরের আর্দ্রতা ঠিক রেখে স্বস্তির পরিবেশ পেতেও এসি ব্যবহার হয়।
অনেক সময় দেখা যায়, ফ্রিজে যেমন বরফ জমে, ঠিক সে রকম এসিতেও বরফ জমছে। এটি মোটেই সাধারণ ঘটনা নয়। বাড়ির ফ্রিজে প্রায়ই বরফ জমে, ফ্রিজে অনেক সময় পানি জমে গায়ে বরফ হয়ে যায়। তখন সেটিকে ডিফ্রস্ট করে সেই বরফ গলাতে হয়। কিন্তু এসিতে কেন বরফ জমে, তা আমাদের জানা প্রয়োজন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, এসিতে কেন বরফ জমে—
সাধারণত এসির গ্যাস প্রায় শেষের দিকে চলে এলে এসির সিস্টেমের কর্মক্ষমতাও কমতে থাকে। যখন গ্যাস কম থাকে, তখন বাষ্পীভবনের কয়েলে বরফ তৈরি হতে শুরু করে। ইভাপোরেটর ঘরের ভেতরের ঠান্ডা করার জন্য কাজ করে কিন্তু গ্যাস কম থাকার কারণে বরফ জমতে শুরু করে। আর সে কারণে তাপমাত্রা ঠান্ডা হওয়াও কমে যায়।
এ ছাড়া নোংরা ফিল্টার ও ব্লক হয়ে যাওয়া এসি ভেন্টের ফলে বায়ুপ্রবাহ কমে যায়। এ কারণে কয়েলে বরফ তৈরি হয়। বায়ুপ্রবাহে বাধার কারণে কয়েল ঠান্ডা হয় এবং বাতাসের আর্দ্রতার কারণেও বরফ জমে যাওয়া শুরু করে। সে কারণে ঠান্ডা হওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। এ জন্য প্রয়োজন পড়ে ফিল্টার পরিষ্কার করা জরুরি।
আবার থার্মোস্ট্যাটের সমস্যার কারণে বরফ জমে যায়। সে জন্য ঠান্ডা করতে আপনাকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় ধরে এসি চালাতে হতে পারে। ফলে কয়েলগুলো ঠান্ডা হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রেও বরফ তৈরি হতে পারে। যদি থার্মোস্ট্যাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে এটি এসির তাপমাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। এ সমস্যা এড়াতে, নিয়মিত এসি রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি।
আর রেফ্রিজারেন্টের মাত্রা কম থাকলে এসির সিস্টেমের কর্মক্ষমতা কমতে পারে। রেফ্রিজারেন্টের মাত্রা কম থাকলে বাতাসকে ঠান্ডা করার জন্য দায়ী কয়েলগুলো জমে যেতে পারে। এর কারণ হলো— পর্যাপ্ত রেফ্রিজারেন্টের অভাব কয়েলগুলোকে খুব ঠান্ডা করে তোলে, যার ফলে বরফ তৈরি হয়।
আর বরফ জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি সিস্টেমের মধ্য দিয়ে বায়ুপ্রবাহ চলাচল সীমিত করে দেয়। ফলে এসি থেকে ঠান্ডা বাতাস বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এটি কেবল ইউনিটের ঠান্ডা করার দক্ষতাই হ্রাস করে না, বরং সঙ্গে সঙ্গে এর সমাধান না করা হলে তা আরও ক্ষতি হতে পারে।
সব সমস্যা এড়াতে নিয়মিত এসির রক্ষণাবেক্ষণ ভীষণ জরুরি। অবশ্যই বড় কোনো ক্ষতি এড়াতে এসির ফিল্টার সবসময় পরিষ্কার রাখা উচিত। এসি ব্যবহার করুন কিংবা বন্ধ অন্তত ছয় মাস পর পর মেকানিক ডেকে পরীক্ষা করিয়ে নিন। এতে বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে আপনি রক্ষা পাবেন।