কৃষি-খাদ্য-মৎস্য খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ১ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা

কৃষি-খাদ্য-মৎস্য খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ১ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা

২০২৫-২৬ অর্থবছরে কৃষি, খাদ্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জন্য মোট ৩৯ হাজার ৬২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৩৮ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা। সেই হিসেবে এই খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ১ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা। 

আজ সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাজেট উত্থাপনকালে তিনি এই কথা জানান।

উপদেষ্টা জানান, কৃষি ফলন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিকূল পরিবেশসহিষ্ণু জাত ও উন্নততর চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন, সুলভ মূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহ, সেচ এলাকা সম্প্রসারণ, বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদেরকে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশ হতে সার আমদানি এবং দেশে ইউরিয়া সার উৎপাদন বাবদ প্রয়োজনীয় ভর্তুকি প্রদান করা হচ্ছে।

উৎপাদিত কৃষি পণ্যের অপচয় রোধ করাসহ সার্বিক কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্যাকেজিংসহ হিমাগার ও কোল্ড চেইন কাঠামো শক্তিশালীকরণ, কৃষি পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি পণ্যের সাপ্লাই চেইনের সকল অংশীজনের একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেইজ তৈরি করা, বিশেষায়িত কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা, ইত্যাদি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

দারিদ্র্য বিমোচন এবং নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলমান রয়েছে। বর্তমানে ১ হাজার ৯০১টি কেন্দ্রের মাধ্যমে সারাদেশে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তালিকাভুক্ত চা বাগানের শ্রমিকদের মাঝে প্রতিকেজি ১৯ টাকা দরে গম বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া, ‘ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট’ কর্মসূচির আওতায় ১০ লক্ষ ৪০ হাজার দুস্থ মহিলাকে মাসে ৩০ কেজি হারে চাল প্রদান করা হচ্ছে।

আগামী অর্থবছরে খাদ্য গুদামের ধারণ ক্ষমতা ৩৭ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীতকরণ এবং খাদ্যশস্য ব্যবস্থাপনার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

দেশের ক্রমবর্ধমান নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে মৎস্য এবং গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির টেকসই জাত উন্নয়ন এবং রোগ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদনের লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ‘দ্য স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড ফিসারিজ এন্ড এগ্রিকালচার ২০২৪’ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ ২য় এবং বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে ৫ম স্থানে রয়েছে।

মিঠা পানির মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছর ২৯ মে থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত হাওড় এলাকায় সকল ধরনের মাছ ধরা বন্ধ রাখার জন্য সরকারি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সামুদ্রিক জলসীমায় ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সকল প্রকার মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা বিবেচনায় রেখে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৫২ লক্ষ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Scroll to Top