কুষ্টিয়ায় উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে পিঠামেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব। শিল্পী সমাজ কুষ্টিয়ার আয়োজনে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে এ মেলার উদ্বোধন করেন জেলা কালচারাল অফিসার সুজন রহমান।
কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির আঙ্গিনায় বসছে এ মেলা। এতে ৫৫টি স্টল বসছে। যার মধ্যে পিঠাপুলিসহ নকশি কাঁথা, হোমমেড খাবার, ফুচকাসহ নানান ধরনের স্টলের পাশাপাশি শিশুদের জন্য রয়েছে নাগরদোলা। ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি, লাঙ্গল, ঢেঁকি, বাকে করে খেজুরের রস আহরণসহ মাটির চুলায় পিঠা তৈরির আয়োজন।
এদিকে উদ্বোধনের প্রথমদিন থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। একই সঙ্গে পিঠা, সাংস্কৃতিক উৎসব ও নানান ধরনের স্টল থাকায় অনেকটা ভিন্ন এ মেলা।
দর্শনার্থী বিপুল হোসেন ও কনক রেজা বলেন, এমন আয়োজন আমাদের অনেক ভালো লেগেছে। বাঙালির ঐতিহ্য পিঠা-পুলির সমারোহ দেখতে ভালো লাগছে। এরমধ্যে আমাদের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার হবে। আমরাও নতুন নতুন পিঠার সাথে পরিচিতি হচ্ছি।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, সারি সারি স্টল। এসব স্টলে বাহারি পিঠার সমারোহ। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এবং বিলুপ্তপ্রায় পিঠার পসরা সাজানো হয়েছে।
স্টল মালিক আইরা কিচেনের মালিক নারী উদ্যোক্তা এমএস ইমা খাতুন বলেন, আমাদের স্টলে সব ধরনের পিঠা রয়েছে। তাছাড়াও পুডিং, মোমো, হোমমেড কেক বিক্রি করে থাকি।
প্রথমদিন থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ভিড় জমিয়েছেন। এতে আমরাও বেশ আনন্দিত। বাহারি পিঠার সমারোহ থাকায় আমাদের স্টলে ভিড় রয়েছে, আশা করি আগামীদিন গুলোতে দর্শনার্থীদের আরও ভিড় বাড়বে।
মেলায় আগত দর্শনার্থী ও স্টল মালিকদের দাবি প্রতি বছরই যেন এমন আয়োজন করা হয়।
কুমাশ পেজের স্বত্বাধিকারী তাবাসসুম তাসা বলেন, আমরা এখানে হাতে মেহেদি পরিয়ে থাকি। বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। প্রতিদিন বিশেষ করে বিকেল থেকে রাত অবধি তরুণীদের ভিড় লেগেই থাকে।
দশ টাকা টিকিট কাটার পর বন্ধু স্বজনের সঙ্গে একটি বড় স্টলে ঢুকেছেন আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, এখানে ঢুকে মনে হলো কোনো গ্রামীণ পরিবেশের মধ্যে ঢুকেছি।
আনজুম কিচেনের স্বত্বাধিকারী সাফিনা আনজুম জনী বলেন, কালের বিবর্তনে হারাতে বসেছে বাংলার চিরায়িত ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে শিল্পী সমাজ কুষ্টিয়ার আয়োজন কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখবে। নতুন প্রজন্ম এই মেলার মাধ্যমে নানা রাকমের পিঠা-পুলির সঙ্গে পরিচিত হবে।
শিল্পী সমাজ কুষ্টিয়ার সভাপতি জাহিদ হাসান বলেন, বাঙালির ঐতিহ্য পিঠা-পুলির সংস্কৃতিকে পুনর্জ্জীবিত করতে এমন আয়োজন। এখানে নানান ধরনের স্টল এবং পিঠার স্টল ভিন্নতা পেয়েছে। আমরা আমাদের সংস্কৃতি ধরে রাখতে এ আয়োজন করেছি।
৫দিন ব্যাপী এ আয়োজনে জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন পরিবেশন করবেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে এ মেলা। ২১ ডিসেম্বর এ আয়োজনের সমাপ্তি ঘটবে।