কাশ্মীরে বহু বছর ধরে সংঘাত চললেও সরাসরি পর্যটকদের ওপর হামলা খুব কমই হয়েছে।
১৯৯৫ সালে পেহেলগামে আল-ফারান নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ছয়জন বিদেশি পর্যটককে অপহরণ করেছিল।
তাঁদের মধ্যে একজনকে হত্যা করা হয়, একজন পালিয়ে যান এবং বাকি চারজনের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
২০০০ সালে পেহেলগামের নুনওয়ান এলাকায় এক হামলায় ৩২ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ২১ জন ছিলেন হিন্দু তীর্থযাত্রী।
এর এক বছর পর, একই এলাকায় শেশনাগ হ্রদের কাছে আরেক হামলায় ১৩ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ১১ জন ছিলেন তীর্থযাত্রী, বাকি দুজন স্থানীয় বাসিন্দা।
২০১৭ সালে অনন্তনাগ জেলায় এক গুলির ঘটনায় ৮ জন হিন্দু তীর্থযাত্রী নিহত হন।
গত বছরের জুন মাসে জম্মুর দক্ষিণাংশের কাঠুয়ায় এক তীর্থযাত্রীবাহী বাসে হামলা হলে সেটি খাদে পড়ে যায় এবং ৮ জন তীর্থযাত্রী নিহত হন।
কিন্তু এবারের, অর্থাৎ মঙ্গলবারের হামলাটি সম্ভবত ২০০০ সালের নুনওয়ানের হামলার পর থেকে পর্যটকদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
সামগ্রিকভাবে কাশ্মীরে ২০০১ সালের অক্টোবর মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্য পরিষদের বাইরে বোমা হামলায় ৩৫ জন নিহত হওয়ার পর এমন ভয়াবহ প্রাণহানির ঘটনা আর দেখা যায়নি।
এই হামলার ধরন ও ভয়াবহতা বেঁচে যাওয়া মানুষ ও স্থানীয় রাজনীতিকদের হতবাক করে দিয়েছে।
গুজরাটের ৬৫ বছর বয়সী পর্যটক বিনু বাই গুলিবিদ্ধ হয়ে অনন্তনাগ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা পেহেলগামে গিয়েছিলাম, আমি তখন মাঠে চেয়ার বসে ছিলাম।
হঠাৎ তিনটা গুলির শব্দ শুনলাম। মুহূর্তেই চারদিকে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। সবাই দৌড়াতে শুরু করে। তখনই একটি গুলি আমার হাতে এসে লাগে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, কাশ্মীর এখন শান্তিপূর্ণ। ভাবতেই পারিনি এমন কিছু হবে।’
স্থানীয় বিরোধী দলের সঙ্গে যুক্ত তরুণ রাজনীতিক ইলতিজা মুফতি বলেন, পেহেলগামে সাধারণত ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী টহল দেয়।
এমন একটি জায়গায়, বিশেষ করে বাইসারানে এ ধরনের হামলা হওয়া খুবই অবাক করার মতো। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজে এ ধরনের হামলার কোনো জায়গা নেই।’