কাশ্মীরের পেহেলগামের সন্ত্রাসী হামলার সময় ঘটনাস্থলে কোন সেনা ছিল না বলে দাবি জানিয়েছে ভারত সরকার।
এনডিটিভি জানিয়েছে, পহেলগামের কাছে বৈসারনে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নয়াদিল্লিতে ভারতের শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে আয়োজিত এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা গাফিলতি নিয়ে সরব হন বিরোধী দলের নেতারা।
বৈঠকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী প্রথম প্রশ্ন তোলেন—“হামলার সময় পেহেলগামের মতো সংবেদনশীল এলাকায় কেন কোনো সেনা মোতায়েন ছিল না?” তার এই প্রশ্নে সমর্থন জানান রাজ্যসভার বিরোধীদলীয় নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে, আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিংসহ আরও কয়েকজন সংসদ সদস্য।
এসময় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈসারন অঞ্চল সাধারণত জুন মাসে শুরু হওয়া বার্ষিক অমরনাথ যাত্রার সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় আসে। তখন আনুষ্ঠানিকভাবে রুটটি খুলে দেওয়া হয় এবং সেনা মোতায়েন করা হয় তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু এ বছর স্থানীয় পর্যটন সংস্থাগুলো ২০ এপ্রিল থেকেই পর্যটকদের নিয়ে ওই এলাকায় যাতায়াত শুরু করে, যার বিষয়ে প্রশাসনের কাছে আগাম কোনো তথ্য ছিল না। ফলে নির্ধারিত সময়ের আগেই পর্যটন কার্যক্রম শুরু হলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।
বৈঠকে আরও একটি আলোচিত বিষয় ছিল ভারতের সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত। বিরোধীরা প্রশ্ন তোলে—যদি ভারতের পানি সংরক্ষণের সক্ষমতা না থাকে, তবে কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো?
জবাবে সরকারি প্রতিনিধি জানান, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবিক লাভের জন্য নয় বরং পাকিস্তানের প্রতি একটি প্রতীকী ও কৌশলগত বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “ভারত সরকার কঠোর অবস্থান নিতে প্রস্তুত—এটিই এই সিদ্ধান্তের মূল বার্তা। ভবিষ্যতে সরকারের অবস্থান কোন দিকে যাবে, তার ইঙ্গিতও এতে রয়েছে।”
বৈঠকে অংশ নেন কংগ্রেস, বিজেপি, এনসিপি-এসপি, শিব সেনা, আরজেডি, ডিএমকে ও সমাজবাদী পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। উপস্থিত ছিলেন জেপি নাড্ডা, সুপ্রিয়া সুলে, প্রফুল প্যাটেল, সসমিত পাত্র, শ্রীকান্ত শিন্ডে, প্রেমচাঁদ গুপ্ত, তিরুচি শিবা ও রাম গোপাল যাদবের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা।