কিশোরগঞ্জের বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক মুহম্মদ রেজাউর রহমান আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (৯ জুন) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
পরিবার থেকে জানানো হয়, মঙ্গলবার (১০ জুন) বাদ জোহর শহরের ঐতিহ্যবাহী শহীদী মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
রেজাউর রহমান ছিলেন কিশোরগঞ্জ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাবেক সভাপতি, সুপরিচিত মুখ এবং শহরের গৌরাঙ্গবাজারের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘শাহজাদি জর্দাঘর’-এর স্বত্বাধিকারী।
১৯৫৫ সালের ১১ জানুয়ারি করিমগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন রেজাউর রহমান। তার পিতা ছিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুর রহমান এবং মাতা আমেনা খাতুন একজন গৃহিণী। সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় তার পদচারণা শুরু হয় ১৯৭৩ সালে, তারই প্রতিষ্ঠিত সাহিত্য সংগঠন ‘সুধাকর’-এর ব্যানারে ভাষা শহীদদের স্মরণে প্রকাশিত সংকলন ‘রক্তের স্বরলিপি’ দিয়ে। ছাত্রজীবনে মফস্বল সাংবাদিকতা শুরু করে একসময় তিনি জাতীয় দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে ঢাকায় দীর্ঘদিন কাজ করেন।
তিনি ছিলেন- সাপ্তাহিক বাংলার দর্পণ, দৈনিক জাহান, সাহিত্য মাসিক চন্দ্রাকাশ, অঙ্গীকার ডাইজেস্ট, সাপ্তাহিক মাটির বাংলা, ইসতিকলাল এবং সাহিত্য পত্রিকা উত্তরকাল-এর সম্পাদক। জাতীয় বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য পাতায় ও বিভিন্ন সংকলনে তাঁর লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হতো।
রেজাউর রহমান ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে কিশোরগঞ্জ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত একটানা সাত বছর তিনি পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সাহিত্যসভা, সাহিত্যসম্মেলন এবং পরিষদের প্রকাশনায় তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন পরিবারের বড় সন্তান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী মমতাজ বেগম, এক ছেলে জাইসী মোহাম্মদ নাভীদ (বর্তমানে নরওয়ে প্রবাসী), এক মেয়ে সারওয়াত নুয়েরী, চার ভাই, তিন বোন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।