জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অর্থ বিভাগের যৌথ উদ্যোগে চালু হয়েছে নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘এ-চালান’। এর মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট শুল্ক ও কর রিয়েল-টাইমে সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া যাবে।
ইউএনবি জানিয়েছে, শুক্রবার (৪ জুলাই) এনবিআর প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অর্থ বিভাগ ও এনবিআরের যৌথ উদ্যোগে নতুন অর্থবছরের শুরুতেই চালু হওয়া এ ব্যবস্থায় আমদানিকারক, রপ্তানিকারক ও তাদের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্টরা এ-চালানের মাধ্যমে অনলাইনে সরাসরি শুল্ক-কর পরিশোধ করতে পারবেন।
এই সিস্টেমের মাধ্যমে এনবিআরের কাস্টমস সিস্টেম অ্যাসিকুডা ওয়ার্ল্ড এবং অর্থ বিভাগের আইবিএএস++ প্ল্যাটফর্মের মধ্যে সফল প্রযুক্তিগত সংযুক্তি (ইন্টিগ্রেশন) সম্পন্ন হয়েছে। ফলে অফলাইন বা অনলাইন উভয় উপায়ে করদাতারা নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি সরকারি কোষাগারে অর্থ পরিশোধ করতে পারবেন। এই অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে সরকারি তহবিলে জমা হবে এবং রাজস্ব খাতে সরকারের তাৎক্ষণিক ব্যয় সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে।
আগে আটিজিএস পদ্ধতির মাধ্যমে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে শুল্ক-কর জমা দিলেও তা কোষাগারে পৌঁছাতে কয়েকদিন সময় লাগত, যার ফলে সরকারের আর্থিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হতো। নতুন ব্যবস্থায় সেই বিলম্ব দূর হয়ে ২৪ ঘণ্টা এবং সাত দিন যেকোনো স্থান থেকে অনলাইনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কর পরিশোধ ও পণ্য খালাস সম্ভব হবে।
‘এ-চালান’ সিস্টেমে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, নগদ, উপায়, রকেট, এমক্যাশ, ট্রাস্টপে ইত্যাদির মাধ্যমে অনলাইন পেমেন্ট করা যাবে। পাশাপাশি, দেশের ৬১টি ব্যাংকের ১১ হাজার ৭০০ শাখা থেকে চেক ক্লিয়ারিং বা অ্যাকাউন্ট ডেবিটের মাধ্যমেও শুল্ক-কর জমা দেওয়া যাবে। পরিশোধ শেষে সিস্টেম জেনারেট করা রসিদ নম্বর দিয়েই বন্দর থেকে দ্রুত পণ্য খালাস করা যাবে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ১ ও ২ জুলাই প্রশিক্ষণের পর ৩ জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতিতে শুল্ক-কর আদায় শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী দিনে ৭৫টি বিল অফ এন্ট্রির বিপরীতে ১৩ কোটির বেশি টাকার রাজস্ব সরাসরি কোষাগারে জমা হয়। এর আগে গত ২৩ এপ্রিল কমলাপুর আইসিডিতে এবং পরবর্তীতে পানগাঁও কাস্টম হাউসে এই পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছিল।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানিয়েছে, আগামী ৭ জুলাই থেকে ঢাকা কাস্টম হাউসসহ দেশের সব কাস্টমস স্টেশনেই ‘এ-চালান’ সিস্টেম চালু হবে। এই উদ্যোগ রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে, পণ্য খালাসের গতি বাড়াবে এবং সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ও গতিশীলতা নিয়ে আসবে।