আবু বাকের মজুমদার: গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঘোষণা দেওয়ার আগে গত ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে আমরা মাসব্যাপী ফিল্ডওয়ার্ক (মাঠপর্যায়ে আলোচনা) করেছি। মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার সাত সরকারি কলেজসহ অংশীজনদের সঙ্গে আমরা বসি। অভ্যুত্থানে যে শিক্ষার্থীরা যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের ৯৫ শতাংশ এখনো লেখাপড়ার মধ্যেই আছেন। তাঁদের সরাসরি জাতীয় রাজনীতি করার সুযোগ নেই। আমাদের মনে হয়েছে, নতুন ধরনের ছাত্ররাজনীতির চাহিদা তৈরি হয়েছে। এই চাহিদাটাকে কীভাবে বাস্তবে রূপ দেওয়া যায়, সেই চিন্তার ফলাফল হিসেবে আমাদের ছাত্রসংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছে।
বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদে জড়ো হয়েছেন। আগে ছাত্রলীগ করেছেন, ছাত্রদল করেছেন কিংবা আগে বামপন্থী ছাত্রসংগঠন করেছেন—এমন শিক্ষার্থীরা আমাদের সংগঠনে যুক্ত হয়েছেন। এখানে ইসলামপন্থী শিক্ষার্থীরা আছেন, বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষেরাও আছেন। আমরা এখানে বিভিন্ন মতের একটা মিশ্রণ ঘটাতে পেরেছি, জুলাইয়ে (গণ–অভ্যুত্থানের সময়) যেমন সব স্রোত একসঙ্গে মিলিত হয়েছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ ছিল। কিন্তু আমরা যখন একটা আলাদা ধারণা নিয়ে ছাত্রসংগঠনের কথা ভাবছিলাম, তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেককে আমাদের নতুন সংগঠনে আসার আহ্বান জানাই। সেখান থেকে একটা বড় অংশ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
আমাদের ছাত্রসংগঠনে সব পর্যায়ে নেতৃত্ব বাছাই হবে ‘বটম টু টপ’ (নিচ থকে ওপরে) পদ্ধতিতে। তবে আপাতত অংশীজনদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা প্রথমে আহ্বায়ক কমিটিগুলো করার চেষ্টা করছি। কেন্দ্রীয় কমিটি করার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে চারটি ইউনিটে ভাগ করেছিলাম। সেখানে চারটি সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি করা হয়েছিল। পাশাপাশি অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার সাত সরকারি কলেজসহ আরও কিছু কমিটি করা হয়। এসব কমিটি যাঁদের সিলেক্ট করেছে, তারা যে অগ্রাধিকার তালিকা করেছে, তার ভিত্তিতেই আমরা কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি করেছি। সব প্রতিষ্ঠান ও জেলায় আমরা একই প্রক্রিয়ায় এগোব।