এনজিও কর্মীদের সহযোগিতা চাইলেন নিজাম হাজারী

এনজিও কর্মীদের সহযোগিতা চাইলেন নিজাম হাজারী

দেশের পাইকারি ও খুচরা গার্মেন্টস পণ্যের মার্কেট হিসেবে খ্যাত গুলিস্তানের বঙ্গবাজার মার্কেট। গত বছরের ৪ এপ্রিল ভোর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিজেদের সব হারিয়ে পথে বসেন প্রায় ৪ হাজার ব্যবসায়ী। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পুড়ে যাওয়া মার্কেটের খোলা আকাশের নিচে খালি জায়গাতেই শামিয়ানা ও চৌকি বসিয়ে কোনোরকমে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন তারা।

ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্যমতে, সেই আগুনে পুড়ে প্রায় হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছিল।

ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর বঙ্গবাজার নতুন করে সাজানো হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে ‍সংগ্রহ করা হয়েছিল আর্থিক তহবিলও। আর্থিক তহবিল সংগ্রহের পর ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করা হলেও সিটি করপোরেশনের ঘোষণার দীর্ঘদিন পার হলেও ভবন নির্মাণের অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা।

তবে ব্যবসায়ীদের সেই অপেক্ষার পালা দ্রুতই শেষ হতে চলেছে বলে জানা গেছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তথ্য মতে, জাতীয় নির্বাচনের পরই শুরু হতে পারে ভবন নির্মাণের কাজ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ মার্কেটের কাজ নির্বাচনের পরে শুরু হবে। বহুতল ভবনের নকশা প্রস্তুত হয়ে গেছে। সেই নকশা নিয়ে মেয়র মার্কেট মালিক সমিতির সঙ্গে মিটিংও করেছে। তাদেরকে নকশা দেখানো হয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নকশার ভুলভ্রান্তি ঠিক করা হয়েছে। এখন শুধু প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষা।’

তিনি বলেন, ‘মেয়র এই নকশা প্রধানমন্ত্রীকে দেখাবেন। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। আশা করি জাতীয় নির্বাচনের পর পরই বঙ্গবাজারে আধুনিক বহুতল ভবনের কাজ শুরু হয়ে যাবে।’

এনজিও কর্মীদের সহযোগিতা চাইলেন নিজাম হাজারী
অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৪ হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


এর আগে গত বছরের ৪ এপ্রিল রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের অর্ধশতাধিক ইউনিটের চেষ্টায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ততক্ষণে বঙ্গবাজার মার্কেট, মহানগর মার্কেট, আদর্শ মার্কেট ও গুলিস্তান মার্কেট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাশের আরও কিছু ভবন। দমকল বাহিনীর অর্ধশতাধিক ইউনিট ছাড়াও সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব সেখানে কাজ করে। আগুন নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে দমকল বাহিনীর আটজন সদস্য আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সবশেষ ৭৫ ঘণ্টা পর পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে আট সদস্যের কমিটি গঠন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮৪৫টি দোকানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়। এর মধ্যে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের চারটি ইউনিটে তথা বঙ্গবাজার, গুলিস্তান, মহানগরী ও আদর্শ মার্কেটে মোট দোকান ছিল ২ হাজার ৯৬১টি।

উল্লেখ্য, বঙ্গবাজার মার্কেটে এর আগেও কমপক্ষে তিনবার বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এর মধ্যে ১৯৯৫ সালে একবার ভয়াবহ আগুনে পুরো বিপণিবিতান পুড়ে যায়। এ ছাড়া ২০১৮ সালেও একবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়।

Scroll to Top