জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বছর গড়ালেও এখনও জুলাই সনদ চূড়ান্ত ঘোষণা না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ পলিটিক্যাল থিংকারস (বিপিটি) আয়োজিত ‘জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, জনগনের গণআন্দোলনের দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটেছে। ছাত্র-জনতার জীবন ও ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া নতুন বাংলাদেশে এখন অনেকেই নিজেদের সুযোগ সুবিধা লুফে নিতে ব্যস্ত। কিন্তু অভুতপূর্ব এই অভ্যুত্থানের দলিল হিসেবে জুলাই সনদ এখনো ঘোষণা করতে পারিনি। জাতি হিসেবে ব্যর্থ এবং হতাশাজনক।
জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ পলিটিক্যাল থিংকারস এর কো-অর্ডিনেটর ইঞ্জিনিয়ার নুর নবীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বরখাস্তকৃত কর্ণেল হাসিনুর রহমান বীর প্রতীক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি এডভোকেট আতিকুর রহমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, জুলাই ঐক্যের সংগঠক ইসরাফিল ফরাজী এবং জুলাই যোদ্ধা হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজ সহ অন্যান্যরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসিনুর রহমান বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি চেয়েছেন ক্ষমতা, অথচ তাকে পুঁজি করে তার মেয়ে বাংলাদেশের মালিক বনে গিয়েছিল। দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। দীর্ঘ সতের বছরের যাঁতাকল থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দিয়েছে জুলাই আন্দোলন। অথচ আজ এক বছর না যেতেই জুলাইয়ের স্মৃতি বিস্মৃত হতে যাচ্ছে। জুলাইয়ের শক্তি সমূহ বিভক্তির ফলে ফ্যাসিবাদের দোসরদের উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছে। আমরা ইন্টেরিম সরকারের কাছে আগে ফ্যাসিস্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আহছানিয়া মিশন কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বিপিটি সদস্য রায়হান চৌধুরী, জুলাই সংগঠক ও যুব নেতা শামীম হাসনাইন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শরিফ আহমদ, সাংবাদিক নেতা তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া মানিক ও জুলাই আন্দোলনে যাত্রাবাড়ীর সম্মুখ যোদ্ধা মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নুর নবী বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসরদের থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশের আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা গত জুলাই আন্দোলনে রাস্তায় নেমে এসেছিল। তাদের স্বপ্ন ছিলো একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ। জুলাই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে আজো তাদের পরিবার চিকিৎসা অভাবে, অবহেলায় দিনাতিপাত করছে। সরকারের সেই দিকে আলোকপাত আশানুরূপ নয়। উপরন্তু ফ্যাসিবাদের এলাবলাররা এখনো অনেক জায়গায় বহাল তবিয়তে বসে আছে। এটা কোন ভাবেই কাম্য নয়। আমরা আশাকরি জুলাইয়ের রক্তের সিঁড়ি বেয়ে গদীতে বসা ইন্টেরিম উক্ত বিষয় গুলো গুরুত্বের সাথে দেখবে।
সংগঠনের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আলমগীর হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন এক্টিভিস্ট আরমান শাহাদাত জনি, বিপিটি এর অন্যতম উদ্যোক্তা জাফর আহমেদ, সিরাজুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।