২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যেসব গান আন্দোলনকারীদের প্রেরণা জুগিয়েছিল, সাহস দিয়েছিল সর্বস্তরের মানুষকে—সেসব গান এবার আসছে এক মলাটে। সৌখিন আলোকচিত্রী ও অ্যাকটিভিস্ট মনজুর হোসেনের সম্পাদনায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে ‘জুলাইয়ের গান’ শিরোনামের একটি বিশেষ বই।
মনজুর হোসেন জানান, বইটি ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের গানের সংকলন। সেই সময় যে গানগুলো আন্দোলনের প্রতিটি ধাপে প্রভাব ফেলেছিল, সে গানগুলোকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে একটি দলিল হিসেবে ধরে রাখার উদ্দেশ্যেই এই প্রকাশনা উদ্যোগ।
চলতি সপ্তাহেই গয়রহ প্রকাশনী থেকে বইটি বাজারে আসবে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঢাকার রাজপথে শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়ন চালায় দেশের নিরাপত্তা বাহিনী। সেই সময়কার শাসক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে বিক্ষোভে নামে ছাত্র-জনতা।
এই উত্তাল সময়েই র্যাপার মোহাম্মদ সেজান প্রকাশ করেন ‘কথা ক’ শিরোনামের একটি বাংলা র্যাপ গান। মুহূর্তেই গানটি তরুণদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে এবং হয়ে ওঠে নতুন প্রতিবাদের প্রতীক।
এছাড়াও, জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রকাশিত ৬৩টি গান সংগ্রহ করে এই সংকলন তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে র্যাপ, ব্যান্ড, একক শিল্পী ও আন্দোলনের পথে জন্ম নেয়া গান।
মনজুর হোসেন বলেন,“ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে গণ-আন্দোলনে সংগীত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তেভাগা আন্দোলন, বঙ্গভঙ্গ বা স্বদেশি আন্দোলন, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময়ও গান মানুষের সাহস ও চেতনার উৎস ছিল। তেমনি ২০২৪ সালের চব্বিশের অভ্যুত্থানেও গান, বিশেষ করে বাংলা র্যাপ গান, দমন-পীড়নের মুখেও ছাত্র-জনতাকে প্রেরণা দিয়েছে।”
তিনি জানান, এই আন্দোলনে অন্তত ৪০টির বেশি বাংলা র্যাপ গান বিভিন্ন ধাপে মুখ্য ভূমিকা রাখে। সেই সময় তরুণ র্যাপাররা রাষ্ট্রের হুমকি, নির্যাতন, জেল-জুলুম উপেক্ষা করেই প্রতিবাদের ভাষায় কথা বলেছেন।
এর আগেও মনজুর হোসেন ‘জুলাইয়ের দেয়ালচিত্র, দেশ সংস্কারের স্লোগান’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি ঢাকা শহরের দেয়ালে আঁকা সাড়ে ১০ হাজারের বেশি গ্রাফিতি চিত্র ধারণ করে, সেখান থেকে ৪৫০টি বাছাই করে গ্রন্থবদ্ধ করেন। ‘জুলাইয়ের গান’ যেন সেই ধারাবাহিক প্রয়াসেরই সুরতাল বলে জানান তিনি।