উত্তরায় দম্পতির ওপর হামলাকারীদের বিষয় যা জানাল পুলিশ | চ্যানেল আই অনলাইন

উত্তরায় দম্পতির ওপর হামলাকারীদের বিষয় যা জানাল পুলিশ | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

রাজধানীর উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় মেহেবুল হাসান ও তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার ইপ্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত পুরো চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. মোবারক হোসেন, রবি রায়, মো. আলফাজ মিয়া ওরফে শিশির, সজীব ও মেহেদী হাসান সাইফ।

আজ বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা মূলত একটি গ্যাং। গ্যাংটির দুই সদস্য বিকট শব্দে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় একটি রিকশাকে ধাক্কা দিয়ে রিকশা যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। এসময় ভুক্তভোগী মেহেবুল হাসান তাদের ঝামেলা করতে নিষেধ করলে তার ওপর হামলা করে।

উত্তরা বিভাগের ডিসি বলেন, ওই রাতে মেহেবুল হাসান ও নাসরিন আক্তার ইপ্তি দম্পতি উত্তরা পশ্চিম থানাধীন আমির কমপ্লেক্স থেকে কেনাকাটা করে বাসায় ফিরছিলেন। এসময় ৭ নম্বর সেক্টরের ওই স্থানে তিন ব্যক্তি দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে বিকট শব্দ করে এলোমেলোভাবে চালিয়ে যাওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেল সামনে থাকা একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। রিকশাটিতে চার বছরের একটি শিশু তার মায়ের সাথে ছিল। শিশুটির বাবা রিকশা থেকে নেমে মোটরসাইকেলচালক আসামি মো. মোবারক হোসেনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু করে।

সে সময় রিকশার পেছনে থাকা ভুক্তভোগী দম্পতি তাদের ঝামেলা করতে নিষেধ করে। সেসময় রিকশার যাত্রীরা চলে যায়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলে থাকা তিনজন মেহেবুল হাসানের সঙ্গে তর্ক শুরু করে এবং এক পর্যায়ে তাকে মারপিট শুরু করে। এ সময় তারা বলতে থাকে “আমাদের চিনিস? আমরা কে?”।

সে সময় ভুক্তভোগী দম্পতি আশেপাশের লোকজনের সহযোগিতায় আক্রমণকারী একজনকে ধরে ফেলে ও তার মোটরসাইকেল আটক করে। এ সময় ফোন করে সে তার আরও কয়েকজন সহযোগীদের ডেকে নিয়ে আসে। তারা দেশীয় অস্ত্র রামদাসহ ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত জনসাধারণের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে রামদা দিয়ে মেহেবুল হাসানকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে।

সে সময় নাসরিন আক্তার ইপ্তি তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাকেও রামদা দিয়ে আঘাত করে। এতে ওই দম্পতি শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

সংবাদ পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের টহল টিম দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনগণের সহায়তায় মোবারক হোসেন ও রবি রায়কে গ্রেপ্তার করে।

রওনক জাহান বলেন, গত সোমবার রাত আনুমানিক ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডের বাসার সামনে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এক দম্পতিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নাসরিন আক্তার ইপ্তি বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গতকাল মঙ্গলবার বিকালে আব্দুল্লাহপুর পশ্চিমপাড়া থেকে রামদা দিয়ে দম্পতিকে কুপিয়ে আহত করা আসামি আলফাজ মিয়া ওরফে শিশিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আলফাজের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাত ২টার দিকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকা থেকে সজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করা অপর আসামি মেহেদী হাসান সাঈফকে টঙ্গীর মাজার বস্তি এলাকা থেকে বুধবার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়।

সাঈফের কাছ থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল ও ঘটনার সময় তার পরিহিত একটি শার্ট জব্দ করা হয়। এছাড়া আজ বুধবার সকালে আলফাজ মিয়া ওরফে শিশির ও মেহেদী হাসান সাইফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তুরাগ নদীর পাড় থেকে ঘটনায় সময় ব্যবহৃত দুটি রামদা উদ্ধার করা হয়।

যারা কুপিয়েছে তারা উত্তরার বাসিন্দা কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা কেউই উত্তরার বাসিন্দা না। তারা অন্য এলাকা থেকে এসে এখানে তাণ্ডব চালায়। এ ধরনের অস্ত্রশস্ত্র তাদের আশেপাশেই হয়তো আছে।

Scroll to Top