ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর পার থেকে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শনিবার (১৯ জুলাই) এই মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদ এবং সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে উঠেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবিতে তার মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ তুলে এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
শনিবার প্রশাসন ভবনের সামনে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী মানববন্ধন করেন। সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন এবং একাত্মতা প্রকাশ করেন।
এসময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানায়, আমার ভাইয়ের মৃত্যুকে আমরা কোনভাবেই সাধারণ মৃত্যুর দৃষ্টিতে দেখছি না। আমরা মনে করি তাকে হত্যা করা হয়েছে। নাহয় একজন ভালো সাঁতারু কিভাবে পানিতে ডুবে মারা যায়, এতো এতো আলামত থাকার পরও প্রশাসন মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে টালবাহানা শুরু করেছে। এমন প্রশাসন আমরা চাই না।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, মরদেহ পাওয়ার ৪০ মিনিট পর আসে এম্বুলেন্স সাড়ে তিন ঘন্টা পর আসে হল প্রশাসন। তাদের কাছে এ ঘটনা সাধারণ মনে হচ্ছে। মরদেহ পাওয়ার ১ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
আন্দোলনের একপর্যায়ে ইবি প্রশাসন সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে উপস্থিত হয়ে বলেন, আমাদের প্রাণপ্রিয় ছাত্রের এমন মৃত্যুতে আমি শোক প্রকাশ করছি। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গতকাল তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তোমরা যে দাবি করছো সে দাবি শুধু তোমাদের নয় এ দাবি আমারো। যদি কেউ এ হত্যার সাথে জড়িয়ে থাকে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে, তোমরা যে প্রতিবাদ করছো এ প্রতিবাদ বন্ধ করবে না, চালিয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, সাজিদ আবদুল্লাহ সাঁতারে পারদর্শী ছিলেন। মাদ্রাসা জীবনে সে সাঁতারে চ্যাম্পিয়নও হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার পরিচিতজনেরা। প্রায়ই বিকালে সহপাঠীদের সঙ্গে পুকুরে সাঁতার কাটতেন তিনি। মৃত্যুর দিন দুপুরে তার সহপাঠীদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলেন তিনি। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন সাজিদ। বিকালে তার মৃতদেহ ভেসে ওঠে পুকুরে।