এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবারও ম্যানার শেখানোর নামে ভর্তির পর থেকে ক্রমাগতভাবে সিনিয়র শিক্ষার্থীদের হাতে র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন কয়েকজন নবীন শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাসে র্যাগিং নিষিদ্ধকরণ করা হলেও কিছুতেই যেন থামানো যাচ্ছে না এই মরণব্যাধি। এই ঘটনায় ৫ জনকে আটকের পর তাদেরকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
আজ (১৮ নভেম্বর) সোমবার রাত ১০টার দিকে লালন শাহ হলের ৩৩০ নম্বর রুমে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৪ নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিং দেয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন একই বিভাগের দুইজন। এছাড়া ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের একজন। পরে এর আগেও বিচ্ছিন্ন কয়েকটি র্যাগিংয়ের অভিযোগে আরও দুইজনসহ মোট ৫ জনকে ইবি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভর্তির পর ২ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ক্রমাগতভাবে বিভাগের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষার্থীদের হাতে র্যাগিংয়ের শিকার হন তারা। অভিযুক্ত ৯ জন শিক্ষার্থী হলেন- ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শফিউল্লাহ, তরিকুল, মুকুল, সাব্বির, লিমন, শিহান, কান্ত বড়ুয়া ও জিহাদ এবং ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সঞ্চয়। ভুক্তভোগী আমির হামজা, শামীম রেজা, রাকিবুল হাসান, আবু সাইম সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থী।
র্যাগিংয়ের শিকার ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর অসহনীয় নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পরিচয় শেখানোর নামে যৌন বিকৃতিমূলক আচরণ করানো হয় তাদের সাথে। নীল ছবির বিভিন্ন চরিত্রসহ নানা অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয় এসব শিক্ষার্থীদের সাথে। ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শফিউল্লাহর নেতৃত্বে ৯ জন শিক্ষার্থী মিলে নবীন ব্যাচের ১৬ জন শিক্ষার্থীকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।

অভিযুক্ত সঞ্চয় বলেন, আমাদের ছোটভাই হামজার সাথে সন্ধ্যায় দেখা হলে মন খারাপ দেখতে পাই। পরে আসলে আমি তাকে আলাদাভাবে রেখে দেই। তখন তার সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয় নাকি, তাকেই জিজ্ঞেস করেন।

এসময় উপস্থিত আমীর হামজা বলেন, আমাকে ভাইরা ডেকে বলেন, আমার মন খারাপ কেন? তখন আমাকে পাঁচ রকমের হাসি দিতে বলেন। যৌন বিকৃতমূলক আচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এই বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, যেহেতু একটা মব তৈরি হওয়ার আশংকা রয়েছে, তাই আপাতত তাদের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরে এই বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ইবি থানা কর্তৃপক্ষ জানান, আপাতত তারা আমাদের হেফাজতে আছেন। পরবর্তীতে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সাথে বসে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।