১৯৭৯ সালের জুনে ‘এইট ডেজ’ ম্যাগাজিনে পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়টি প্রথম প্রকাশ পায়। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রচন্ড উত্তেজনা তৈরি হয়। ইসরায়েল তখন ডাচ সরকারের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানায়, যেহেতু আমস্টারডামে ইউরেনকোতে চাকরি করতেন আব্দুল কাদির। ডাচ সরকার তখন এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
নেদারল্যান্ডসের একটি আদালত ১৯৮৩ সালে আব্দুল কাদিরকে গুপ্তচরবৃত্তির প্রচেষ্টার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে। যদিও পরবর্তীতে কারিগরি নিয়মের কারণে রায়টি বাতিল হয়ে যায়। অন্যদিকে তখন পাকিস্তানে পারমাণবিক কর্মসূচির কাজ চলতে থাকে। ১৯৮৬ সালের মধ্যে আব্দুল কাদির নিশ্চিত হয়ে গেলেন, পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা তৈরি হয়ে গেছে।
কয়েকজনকে গুপ্তহত্যাসহ পাকিস্তানের এ পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করার জন্য জোরালোভাবে প্রচেষ্টা চালানো হয়। ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয় এর পেছনে যুক্ত ছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ।
পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে নিতে আব্দুল কাদিরের সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত থাকা ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তাদের টার্গেট করা হয়। পশ্চিম জার্মানিতে একজনের কাছে একটি লেটার বোমা (খামবন্দী বিস্ফোরক) পাঠানো হয়েছিল, তিনি রক্ষা পেলেও তার কুকুরটি মারা যায়।
আরেকটি বোমা হামলা চালানো হয়েছিল সুইজারল্যান্ডের কোম্পানি কোরা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ওপর লক্ষ্য করে, যে কোম্পানিটি পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে কাজ করছিল।
একটি কোম্পানির মালিক সিগফ্রিড শের্টলার সুইস ফেডারেল পুলিশকে বলেছিলেন যে মোসাদ এজেন্টরা তাঁকে এবং তাঁর বিক্রয়কর্মীদের বারবার ফোন করেছিলেন। তিনি বলেন জার্মানিতে ইসরায়েলি দূতাবাসে কর্মরত ডেভিড নামে এক ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে তাঁকে পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়ে ‘এই ব্যবসা’ বন্ধ করতে বলেছিলেন।
ইতিহাসবিদ আদ্রিয়ান লেভি, ক্যাথরিন স্কট-ক্লার্ক এবং আদ্রিয়ান হ্যানি যুক্তি দিয়ে বলেছিলেন যে মোসাদ পারমাণবিক বোমা তৈরিতে পাকিস্তানকে আটকাতে ব্যর্থ গুপ্তহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল।