ইসরায়েলি কর্মকর্তার সঙ্গে আহমেদ আল শারার গোপন সম্পর্কের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস! – DesheBideshe

ইসরায়েলি কর্মকর্তার সঙ্গে আহমেদ আল শারার গোপন সম্পর্কের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস! – DesheBideshe


ইসরায়েলি কর্মকর্তার সঙ্গে আহমেদ আল শারার গোপন সম্পর্কের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস! – DesheBideshe

তেল আবিব, ১০ জুলাই – বাশার আল আসাদকে বিতাড়িত করে সিরিয়ার ক্ষমতায় বসা আহমেদ আল শারার সঙ্গে ইসরায়েলের গোপন সম্পর্কের চাঞ্চল্যকর এক তথ্য সামনে এসেছে। সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইসরায়েলের শীর্ষ এক কর্মকর্তার সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল শারা গত বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা তজাচি হানেগবির সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন। কূটনৈতিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, গত বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদের তত্ত্বাবধানে এ বৈঠক আয়োজিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল শারা এবং হানেগবি আলাদা ফ্লাইটে প্রায় একই সময়ে আবুধাবিতে পৌঁছান। এই বৈঠকটি দামেস্ক এবং তেল আবিবের মধ্যে চলমান সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ আলোচনায় একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, দামেস্কের নতুন নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে একটি সমন্বয় গড়ে উঠছে। বৈঠকের একটি প্রধান ফলাফল হলো, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থনের বিনিময়ে ইসরায়েলকে গোলান মালভূমি ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছেন আল-শারা।

সূত্র আরও জানায়, ইসরায়েলের দখলকৃত গোলান মালভূমির এক-তৃতীয়াংশ ফেরত চায় সিরিয়া। প্রস্তাবিত দুটি পরিকল্পনার মধ্যে একটিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েল গোলান মালভূমির এক-তৃতীয়াংশ সিরিয়াকে ফিরিয়ে দেবে এবং এক-তৃতীয়াংশ ইসরায়েল রাখবে। আর বাকি এক-তৃতীয়াংশ ২৫ বছরের জন্য ইসরায়েলের কাছে ইজারা দেওয়া হবে।

আলোচনার আওতায় দারাআ, কুনেইত্রা ও আস-সুয়েইদা প্রদেশে তিনটি নিরস্ত্রীকরণ অঞ্চল স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে। এসব অঞ্চলে সিরিয়ার সেনা ছাউনি থেকে ভারী অস্ত্র প্রত্যাহার করে শুধু হালকা অস্ত্র বহনকারী সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করার শর্ত রাখা হয়েছে।

এছাড়া সিরিয়া দাবি করছে, লেবাননের ত্রিপোলি শহর ও বেকা উপত্যকাসহ উত্তর লেবাননের কিছু অঞ্চল ‘ঐতিহাসিকভাবে সিরিয়ার অংশ’ ছিল। এটি ফরাসি উপনিবেশের সময় লেবাননে সংযুক্ত হয়। এই অঞ্চলগুলো ফিরিয়ে আনতে এবং তা একটি সামগ্রিক চুক্তির অংশ হিসেবে আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে চায় সিরিয়া।

সিরিয়া, ইসরায়েল এবং তুরস্কের মধ্যে একটি আঞ্চলিক জলসম্পদ চুক্তির প্রস্তাবও আলোচনায় এসেছে। এর আওতায় ইসরায়েলকে ইউফ্রেটিস নদী থেকে পানি সরবরাহের জন্য পাইপলাইন স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।

এই বৈঠকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত একটি অন্য ঘটনায় দেখা গেছে, সিরিয়ার এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক কর্মী সম্প্রতি ইসরায়েলি সংসদ (নেসেট) সফর করেছেন। সেখানে তিনি প্রেসিডেন্ট আল-শারআর পক্ষ থেকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। শাদি মার্টিনি নামে ওই ব্যবসায়ী ইসরায়েলি সংসদে বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সিরিয়ার যে বন্ধন তৈরি হয়েছে, তা একটি ‘সুবর্ণ সুযোগ’।

এদিকে ইসরায়েলি আরেক সংবাদমাধ্যম দ্য জেরুজালেম পোস্ট থেকে জানা গেছে, আগামী সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গেও দেখা করতে যাচ্ছেন সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা।

প্রসঙ্গত, সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর বাশার আল আসাদের দুই যুগের শাসনের অবসান ঘটান আহমেদ আল-শারা। সিরিয়ার প্রধান শাসক দল হয়ে ওঠে তার হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গ্রুপ। বিদ্রোহীদের দখলকৃত ইদলিব প্রদেশে তারা আগে যে স্থানীয় সরকার চালাতেন তার কর্মকর্তাদের নিয়েই একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন আল-শারা।

অন্যদিকে বাশার আল আসাদের পতনের পরপরই সিরিয়া নিয়ন্ত্রিত গোলান মালভূমির একটি বড় অংশ দখল করে নেয় ইসরায়েল। সেখানে ইহুদি বসতি বাড়াতে তৎপরতাও বাড়িয়ে যাচ্ছে দেশটি।

সূত্র: আরটিভি নিউজ
এনএন/ ১০ জুলাই ২০২৫

 



Scroll to Top