ইরানে ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ডের জেনারেল কাশেম সোলাইমানির সমাধির পাশে ভয়াবহ বিস্ফোরণ দু’টি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইআরজিসি কমান্ডার আহমেদ ওয়াহিদি। তিনি বলেছেন: ‘শত্রুরা মনস্তাত্ত্বিক অভিযান শুরু করছে’।
বুধবার ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কেরমানে কাশেম সোলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে কবর জিয়ারতের সময় জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১০৩ জন নিহত হয়েছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সূত্রে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বিস্ফোরণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইআরজিসি কমান্ডার আহমেদ ওয়াহিদি। তবে এখনই এই বিষয়টি প্রকাশ করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘এটি পর্যালোচনা ও যাচাই করার পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।’
দেশটির বিচার বিভাগের প্রধান গোলাম হোসেন মোহসেনি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেন, ‘অবিলম্বে এই গুরুতর অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা এজেন্টেদের নিঃসন্দেহে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, দায়িত্বশীল সকল সংস্থা বিশেষ করে, গোয়েন্দা, নিরাপত্তা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সকল প্রমাণ সংগ্রহ করে অপরাধীদের দ্রুত বিচার বিভাগের কাছে হস্তান্তর করবে।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় কুদস ফোর্সের শীর্ষ কমান্ডার কাশেম সোলাইমানি নিহত হন। বুধবার ইরানের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, কাশেম সোলাইমানির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শত শত মানুষ তার সমাধিস্থলের দিকে যাওয়ার সময় জোড়া বিস্ফোরণ ঘটেছে।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণে ১০৩ জন নিহত ছাড়াও অন্তত ১৭১ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহতদের মধ্যে অনেকে শিশু বলে জানা গেছে।
কেরমানের ডেপুটি গভর্নর বিস্ফোরণের এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা সন্ত্রাসী হামলা।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিস্ফোরণের একাধিক ভিডিওতে বেশ কিছু মরদেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন প্রথম বিস্ফোরণের কয়েক মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে খবর দিয়েছে। কেরমান প্রদেশের স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী হামলার কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে।’
সোলাইমানিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পর সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে দেখা হতো। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন সোলাইমানি। তিনি ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ড কোরের- আইআরজিসি অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান ছিলেন।