আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের পর ইউক্রেনের জন্য ‘অভূতপূর্ব নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দিতে রাজি হয়েছেন পুতিন। এ দাবি করেছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
রবিবার সিএনএনকে উইটকফ বলেন, আমরা এমন একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো কার্যত ন্যাটোর অনুচ্ছেদ-৫ এর মতো ভাষায় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে পারবে। এটি গেম চেঞ্জারের মতো।
ন্যাটোর ওই ধারায়, একটি সদস্য রাষ্ট্রের ওপর আক্রমণ হলে পুরো জোটের ওপর আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করা হবে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের বিরোধিতা করে আসছে। উইটকফ বলেন, এ ব্যবস্থাটি ন্যাটোতে যোগদানের বিকল্প হতে পারে, যদি ইউক্রেন তা মেনে নিতে পারে।
আলাস্কা থেকে ফেরার পথে বিমানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে বলেও জানান উইটকফ। তিনি মনে করেন, সোমবার ওয়াশিংটনে বৈঠকটি ফলপ্রসূ হবে।
আলোচনায় ভূখণ্ড সংক্রান্ত ইস্যুতে অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। বিশেষ করে ক্রিমিয়া, লুহানস্ক, ডনেস্ক, জাপোরিজ্জিয়া ও খেরসন—এই পাঁচটি অঞ্চলকে কেন্দ্র করেই মূল আলোচনা চলছে।
২০১৪ সালে ক্রিমিয়া ও ২০২২ সালে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ গণভোটের মাধ্যমে বাকি চার অঞ্চল সংযুক্তির ঘোষণা দেয় রাশিয়া।
উইটকফ বলেন, রুশরা আলোচনার টেবিলে ওই পাঁচ অঞ্চল নিয়ে কিছু ছাড় দিয়েছে। ডনেস্ক অঞ্চলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে। আশা করি, আগামীকালের বৈঠকেই কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।
এদিকে, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ও কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম–জোমার্ট টোকায়েভকে বিস্তারিত অবহিত করেছেন পুতিন। টোকায়েভ বৈঠককে ‘অভূতপূর্ব সাফল্য’ আখ্যা দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রতি নজিরবিহীন কূটনৈতিক সমর্থন জানাতে সোমবার তিনি যখন হোয়াইট হাউজে যাবেন তখন তার সঙ্গে থাকবেন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ফিনল্যান্ডের নেতারা। আরও থাকবেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ও ন্যাটো মহাসচিব।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সাংবাদিকদের বলেছেন, ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জেলেনস্কির আলাপ হয়েছে। ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় তাদের অগ্রাধিকার হবে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং আন্তর্জাতিক আইন ও আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া।